উদভ্রান্তের মত অনেকটা রাস্তা ছোটা হয়ে গেছে
ততটা কাছাকাছি পৌঁছানো যায়নি যদিও
চোরাবালিতে বেশ খানিকটা ডুবে আটকে।
আকাশটা পুরোপুরি বিদায় জানাতে না পেরে মাথার উপর থমকে দাঁড়িয়ে আছে।
ঘাম চুঁইয়ে চুঁইয়ে বিছানা তোশক ভিজিয়ে চলেছে অবিরাম
"ও বাবা ওঠ, কাজে যাবিনি?"
মশার আওয়াজের মত বৃদ্ধার কণ্ঠস্বর নেশাগ্রস্থ ঘুমন্ত ছেলের কানে,
ছেলে ঘুমন্ত গলায় বলল, বাল।
তেলচিটে দেওয়ালের পাশে ভাঙা জানলা,
একটা কাক কাঠি মুখে করে করে নিয়ে আসছে।
বাসা বাঁধছে।
দাস বাড়ির বড় বউ ইনসুলিন ইঞ্জেকশানটা নিতে নিতে তাকিয়ে আছে সেদিকেই,
ঘরটাতে রঙ করা হয়নি বহুকাল
"বৌমা ভাত দাও" বলতে ইচ্ছা করছে না
ভাতের সাথে গাল রোজ সহ্য হয় না,
আজ যেমন হচ্ছে না।
হঠাৎ কালো ঘন মেঘ করে এলো দক্ষিণাকাশে।
বোসেদের বাড়ির কাপড় উড়ে পড়ল মিত্র বাড়ির ছাদে, যারা কথা বলে নি দু'যুগ হল।
ডাস্টবিনের থেকে ঠোঙা উড়ে এসে ঢুকল পালেদের ইস্ত্রী করা বিছানার চাদরে।
গাছের মগডালে আটকানো ঘুড়ি উড়ে এলো গলির নালার পাশে।
হই হই করে রাস্তায় নামল কচিকাঁচার দল-
চারিদিকে হুলুস্থুল কাণ্ড।
বৃদ্ধা মেঘের দিকে তাকিয়ে বলল, আঃ-
দমকা ভিজে বাতাস তার সাদা চুল উড়িয়ে, দেওয়ালে ঝোলানো ক্যালেন্ডার ফেলে দিল মেঝের উপর।
বড় বউয়ের গালে এসে পড়ল এক ফোঁটা বৃষ্টির জল,
সে অস্ফুটে বলল, আঃ-
আজ ভাত চাইবেই না, নিজে থেকে না দিলে।
শুধু পর্দাটা টেনে খুলে দিল একটানে
বিছানা ভেজে ভিজুক।
রাতের দিকে বৌমা পায় শাশুড়ীকে মৃত, ভিজে বিছানায় পড়ে।
ডাক্তার বলল, সুগার ফল করেছিল।
পরেরদিন সকালে নেশা ছোটার পর,
ছেলে উঠে মাকে পায়নি
পেয়েছে মেঝেতে লুটানো ক্যালেন্ডারে মায়ের হাতের লেখা.
"আমায় খুঁজো না আর"।