বাজারে বেরোয় রোজ। দুটো হাত হাওয়ায় দুলতে দুলতে যায়। কিন্তু রোজ কার হাতে যেন হাত লেগে যায়। হাতটা নাকের কাছে এনে শোঁকে। এক একদিন এক একটা গন্ধ।
একদিন বারুদের। একদিন গোলাপের। একদিন রক্তের। একদিন খাবারের। একদিন মাটির। একদিন শিশিরের। একদিন বিষ্ঠার। একদিন শেওলার…. একদিন একদিন…. বদলে বদলে যায়……
রোজ রোজ হাত ধুতে হয়। এখন মনে পড়ে না আগের দিন কার হাত লেগেছিল হাতে। কী গন্ধ লেগেছিল নাকে।
বাজারে বেরোতে ভয় পায়। এত এত হাত মানুষের! এত এত গন্ধ?
ফিরে এসে খিল দেয় দরজায়, হাত ধুয়ে এসে কচলে কচলে। নিজের হাতটা দেখে চোখের কাছে এনে। নাকের কাছে এনে। ভালো করে তাকিয়ে দেখলেই দেখে, হাতের মধ্যে লক্ষ লক্ষ হাত। লক্ষ লক্ষ বিচিত্র গন্ধ নিয়ে মাখামাখি করছে সব কিছু, কী উন্মত্ততায় মেতে!
আলো নিভিয়ে দেয়। দুটো হাত রাখে মাথার দুপাশে। যতটা পারে দূরে। মাথার মধ্যে জন্মায় প্রার্থনা। নিঃশব্দে। দুটো হাত জড়ো করতে চায়। পারে না। হয় না। একলা প্রার্থনা মস্তিষ্ক থেকে জন্মে নিঃসঙ্গ বিহ্বল হৃদয়ে এসে বসে। ডানা ঝাপটায়। মহাকাল উদাসীন শিশিরের মত ভিজিয়ে যায় ডানা, বিন্দু বিন্দু, কাঁধে হাত রেখে।