কচুপাতার উপর একফোঁটা জল। সে জলের উপর সূর্যের আলো পড়ে মনে হচ্ছে যেন মুক্ত।
পাগল দুই হাতে তালি দিয়ে বলল, মুক্ত, মুক্ত।
চারদিকে খবর রটে গেল। পদার্থবিদ এসে বলল, মুক্ত কোথায় হে? এ যে জল, পাতা আর আলোর একত্রিত অবস্থান।
পদার্থবিদ অঙ্ক কষে জলের মধ্যে আলোর প্রতিফলনের হিসাব করে দেখালো। কেন অমন লাগছে তাও বোঝালো।
পাগল হাসল। বলল, তুমি বাড়ি যাও। আমি মুক্ত দেখি।
পদার্থবিদ বলল, ওরে পাগল, সূর্য সরে গেলেই মুক্ত হাপিস হবে।
পাগল বলল, তুমি চলে গেলে, এ সব হিসাবও হাপিস হবে। মুক্তও হাপিস হবে। আমার থাকবে মুক্তর ঝলকের স্মৃতি। তোমার থাকবে অঙ্কের সংখ্যাগুটিক।
পদার্থবিদ বলল, আমি তাই চাই। পাগল বলল, আমি চাই অন্য, মুক্ত।
পদার্থবিদ বলল, তুমি নিজেকে ঠকাচ্ছ, সত্যকে অস্বীকার করে।
পাগল হেসে বলল, না, আমি জগতের তথ্যকে দূরে রেখে মনের সত্যকে জাগিয়ে দেখছি, এ আমার সৃষ্টি। প্রকৃতি দিল কচুপাতা, জল, আলো, আমি বানালাম মুক্ত। তুমি খালি হিসাব করে প্রকৃতির রসদের খবর দিলে। ওতে আমার প্রাণে রস জাগল কই? কিছু জানলাম, এই বোধ হল খালি। আমি জানার চাইতে বেশি কিছু চাই যে, সৃষ্টির আনন্দ!
পদার্থবিদ বলল, আমিও সৃষ্টি করতে পারি, এমন মুক্ত।
পাগল বলল, না গো না, তুমি প্রকৃতিকে নকল করে বানাও এটা সেটা, সে কাজের জিনিস, আমার রসের জিনিস নয়। তুমি যাও, আমি বসি।
পদার্থবিদ চলে গেল। যেতে যেতে বলে গেল, পাগলের কারবার যত।
পাগল হেসে বলল, জগত জোড়া তাই তো গো... তোমার জানার বাতিক গেলেই বুঝবে.. সবই পাগলামি আদতে।
('মুক্তা' সঠিক বানান। মুক্তো কথ্য। এখানে সচেতনভাবেই বানানটা - মুক্ত)