- কলমের ডগায় কি থাকে?
- গান
- আরেকটা চপ দেব?
- থাক, উঠি। পেটের ভিতরটা গড়বড়।
- আজ রাতে কোথায় থাকবা?
- বুড়োশিবতলায়।
- মশা যে, সাপও আছে।
- থাকলই না হয়।
- চললে তবে?
- চলি।
দোকান ছেড়ে এগিয়ে রাস্তাটা বাঁকা, একটা টিলার উপর উঠে গেছে। টিলার মাথার উপর মন্দির।
- এলে?
- এলাম।
- থাকবে?
- আজ রাতটা।
- সন্ধ্যে করে এলে যে?
- হয়ে গেল।
- মন্দিরের ভিতরে শোবে না আমার গা ঘেঁষে আমার পাতার ছাওয়ায়?
- ভাবিনি।
- ভাবো। আজ আমি ঘুমাব না। সারারাত জাগব।
- কেন?
- আজ মধ্যরাতে বর্ষা আসবে। ভিজব।
- এখন আকাশে এক টুকরো মেঘও নেই।
- ওরা আসছে।
- আচ্ছা বেশ, আমি মন্দিরের ভিতরে যাই।
- এসো।
মন্দিরের ভিতরে একটা প্রদীপ জ্বলছে। সারারাত জ্বলে থাকে। সকালে পুরোহিত এসে নেভায়।
- শোবে?
- জানি না।
- জানবে। অপেক্ষা করো।
- জানি, সময় জানিয়ে দেয়।
- সময়। হ্যাঁ সময়।
- কিন্তু একটু গভীরে গেলে সময় নেই যে, সব স্থির।
- তুমি গেছ?
- থই পাইনি। ভয় পেয়েছি। অস্বস্তি হয়েছে।
- সেখানে আলো নেই?
- না। গভীর অন্ধকার।
- কষ্ট পেয়েছ?
- পেয়েছি।
- পাওনি। পেলে সংশয় থাকত না, বাইরে না ভিতরে শোবে। কষ্ট পেলে আলোতে দেখতে নিজের অন্য মুখ।
- চেষ্টা করেছি তো দেখার!
- চেষ্টা করলে দেখা যায় না। চেষ্টার বোধ ছাড়িয়ে গেলে দেখা যায়।
- আজ রাতে ঝড় উঠবে। আলো নিভে যাবে।
- ঝড়ে আলো জ্বলে ওঠে।
- সে ঝড় আমি পাইনি।
- জানি।
ঝড় এলো মাঝরাতে। তুমুল ঝড়। ভীষণ ঝড়। তাণ্ডব চলল সারারাত ধরে।
পুরোহিত এসে দেখল বটগাছটা ভেঙে মন্দিরের উপর পড়ে আছে। মন্দিরের অনেকটা অংশ ভেঙে গেছে। মন্দিরের ভিতরে প্রদীপটা নেভেনি। স্থির জ্বলছে। কার থলে একটা রাখা শিবলিঙ্গের পাশে। তার পাশে ছড়িয়ে জপের মালার রুদ্রাক্ষেরা। কে যেন এসেছিল, কে যেন চলে গেছে।