নতুন বউকে নিয়ে মায়ের মন্দিরে ঢুকল নতুন বর। নতুন বউ হাঁটু মুড়ে বসে মাকে অনেকক্ষণ ধরে প্রণাম করল। বর আড়চোখে ভুরু কুঁচকে দেখতে দেখতে ভাবল, এত ভক্তি! বাহ্।
ফুলশয্যার রাত। বউকে বর গদগদ স্বরে জিজ্ঞাসা করল, হ্যাঁ গো, জানো তো, মা ভীষণ জাগ্রত আমাদের! পটলাদার ছেলে হচ্ছিল না। খালি মেয়ে, খালি মেয়ে। শেষে মায়ের কৃপায় ছেলে হল। নাম রেখেছে কালীচরণ। সেকেলে নাম। কিন্তু ভীষণ আধুনিক ওরা।
বউ বলল, সে তো বুঝতেই পারছি।
তাছাড়া দেখো না, ওই বটুকদার ছেলের বউ, কি দজ্জাল, কি দজ্জাল ছিল। ওই বউ নিয়ে কেউ ঘর করতে পারে? তা মাঝে মাঝেই এটা ওটা কথা কাটাকাটি হত। সে কার বাড়ি না হয় বলো? তারপর বটুকদার ছেলেটার দোকান চলছিল না ঠিকঠাক। বউটাকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনতে বললে আনবে না এমন ত্যাঁদড় মেয়েছেলে। কেন রে? তোর বাপের সম্পত্তি কে খাবে? তো মেয়েটা একদিন গলায় দড়ি দিল। এত ন্যাকামি বাবা আমার সহ্য হয় না। ওদেরও হল না। তা আমরা তো ভাবলাম হল, এবার সবশুদ্ধ জেলে পচবে বুঝি। হল না জানো, মায়ের ইচ্ছায় এমন একজন পুলিশ আর উকিল ওরা পেল। সে সব সাল্টে দিল। মাকে একটা সোনার মুকুট দিল তাই ওরা। ঠিক করেছে না?
বউ বলল, সে আর বলতে!
বর আরো কাছে এসে, বউয়ের কাঁধে হাত রেখে জিজ্ঞাসা করল, হ্যাঁ গো, তুমি মায়ের কাছে অতক্ষণ বসে কি চাইছিলে? মা কিন্তু ভীষণ জাগ্রত, না গো?
এই বলে বর টুক করে বউয়ের গালে একটা চুমু খেয়ে বলল, কি চাইছিলে গো? ছেলে.... হে হে... তাই না গো... আমি জানি...
বউ বলল, না গো। আমি মায়ের কাছে প্রার্থনা করছিলাম, মা গো, এই নতুন বাড়ি... নতুন লোকজন... কে কেমন জানি না... যদি কিছু ব্যাগড়বাই আমার বর করে... মানে বেশি কিছু করে.. আমি কি করব?.... তুমি বললে বিশ্বাস করবে না, মা দেখিয়ে দিলে....
বর বড় বড় চোখ করে বলল, কি দেখিয়ে দিলে গো?
বউ বলল, মায়ের হাতে ধরা কাটা মুণ্ডুটা দেখেছ না? কি বলব গো, আমি তাকিয়ে দেখি সে পুরো তোমার মুখ বসানো... এই চোখ... এই নাক... এই ঠোঁট... শুধু গলার কাছ থেকে.... যা হোক... মা সত্যিই জাগ্রত গো.... মা রাস্তা দেখিয়ে বললেন, তুই এতটা করে আনবি... বাকিটা আমি বুঝে নেব.... সত্যিই মা ভীষণ জাগ্রত গো... জয় মা... জয় মা...