Skip to main content


অবশেষে চুপ থাকতে পারলাম না। JNU তে যা ঘটছে তার প্রতিবাদ- সমর্থন জটিলতা নিশ্চই আছে। সে ধোঁয়াশা কাটতে সময় লাগবে। লাগুক। আমি আশ্চর্য হলাম, হতবুদ্ধি হলাম অবশেষে দুটো ঘটনায়।

এক) বিখ্যাত কবি শ্রীজাত তাঁর একটি পোস্টে লিখছেন…”ছাত্রনেতা কানহাইয়া কী বলেছেন, তাঁর সমর্থকদের দাবি দেশদ্রোহিতা কিনা, তাঁদের ঘাড় ধরে পাকিস্তানের মাটিতে ছেড়ে দিয়ে আসা উচিত কিনা, এসব নিয়ে তর্ক চলবে। তর্ক চলা ভাল, তাতে মাথার ব্যায়াম হয়। অবিশ্যি যদি মাথা থাকে, তবেই। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পুলিশি মেহফিল আমার কাছে সমর্থনযোগ্য নয়। সেরকম ভাবতে গেলে দেশের বহু অংশে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান ম্যাচ জিতলে বাজি ফাটানো হয়। তাঁদের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হোক তবে?”
এতো ভয়ংকর কথা! ক্রিকেটে পাকিস্তান জিতলে বাজি ফাটানো আর দেশের ঐক্যের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া এক বস্তু কি করে আপনার কাছে? তাও যেখান থেকে বুদ্ধিবৃত্তির সার অংশের বিকাশ প্রকাশ বলে আমরা বিশ্বাস করি?! তারপর উনি একটি বিদেশি নামের উদাহরণ দিয়ে বলছেন..”.গণতন্ত্রকে অনেক কিছু ধারণ করতে পারতে হয়, ঔদার্য দেখাতে হয়। সেটাই নিয়ম। সেটাই কাম্য।“
একি কথা কবি? দেশের ঐক্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনকেও গণতন্ত্র সহ্য করবে? কাল আমার দেশের পতাকা নিয়ে কেউ নোংরামি করবে...পরশু আমার দেশের জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে কেউ আইটেম সং গাইবে...আমায় চুপ করে এসবের সাক্ষী হতে হবে? উদারতার সীমা কদ্দুর আপনার কাছে?
রাজনীতির বাম ডান যায় যাক, তাদের স্বার্থ অন্য জায়গায়। কি মহৎ উদ্দেশ্যে তারা একজোট হন, সে বুঝতে আজকাল আর বাকি নেই কারো। সে উচ্চ আদর্শ সব বনসাই হয়ে গিয়েছে আশু স্বার্থের টবে।
তা বলে একি ভয়ানক উদারতার আশা আপনি রাখছেন? এতো ভয়ংকর!


দুই)
আমি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মশাল হাতে স্লোগানগুলো শুনলাম। আমার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা খুব উঁচুদরের নয়। তাই এত কথা বোঝার আমার সামর্থ্য নেই। শুধু মনে হচ্ছিল কলকাতার এই নিরাপদ রাস্তায়, এত গণমাধ্যমের সামনে এ দাবী কেন? কেন কাশ্মীরের সেই মুক্তবাহীনির পাশে নয়। কেন সেই সব সেনাদের নামে ধিক্কারসভা ডাকছেন না যারা অখন্ড ভারত রাখতে সেখানে প্রাণ দিয়ে আসছেন সেই কবে থেকে? কি বোকা না তারা? সেই শহীদ সেনাদের ( দুঃখিত, আমি আফজলের মহৎ উদ্দেশের ব্যাপারে বিশদ জ্ঞান বা তথ্য জোগাড় করে উঠতে পারিনি, তাই সেনাদেরই শ্রদ্ধা জানাই, তার একটা ক্ষুদ্র কারণ তারা প্রকাশ্যে লড়ার সাহস দেখায় বলে) ছেলেমেয়েরা ভাবছে না, তাদের বাবারা কি বোকা ছিল? কেন যে তারা এত বড়বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়েনি, তা হলে বুঝত কাশ্মীরের মুক্তির জন্য লড়াইটা আরো কত মহান ছিল। না হয় কটা গোপন আক্রমণই চালাত! হায় রে মূর্খ সেনার দল!
আসলে কি জানেন, উদারতা আমি বুঝি। আপনাদের মত ওতটা বিজ্ঞ না যদিও আমি। আমার এই শরীরটা বিভিন্ন কোষ কলা তন্ত্রে তৈরী। তারা নিজের মধ্যে বিভেদ রেখেও সামঞ্জস্যের সাথে কাজ চালাতে পারে, কারণ তারা ঐক্যে বিশ্বাসী। কিন্তু কিছু কোষ মাঝে মাঝে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। ওরা আমারই শরীরে লালিত হয়ে, আমারই শরীরের সামঞ্জস্যতা, ঐক্যের বিরুদ্ধে যেতে চায়। ওদের আমরা ক্যান্সার কোষ বলি। যদি প্রথমেই ধরা পড়ে তবে ক্ষুদ্র থাকতেই আমরা তাকে সার্জারী করি বা কেমো দিয়ে তার বৃদ্ধি প্রতিহত করি। অবশ্যই সেটা ওই কোষগুলোর সাথে অন্যায় করা। তারা তো আর কিছু না, আমার দেহের মধ্যেই পৃথকত্ব চেয়েছিল, কিন্তু অতটা উদারতায় প্রাণ বাঁচে না যে! অগত্যা...
উদারতা ভাল, বাক স্বাধীনতা ভাল। সামঞ্জস্যতাতে, ঐক্যের পক্ষে যতক্ষণ না যায় ততক্ষণই ভালো। না তো বিপদ, আপনার আমার না, সবার। বিভ্রান্তি শুধু ধুলোই উড়ায় না, পথভ্রষ্টও করে।