সৌরভ ভট্টাচার্য
20 October 2018
ভালোবাসা অমর বলেছিলে। সে মিথ্যা কথা। যে দেশে মৃত্যু নেই, সে দেশে ভালোবাসাও নেই। জীবন আর মরণের দড়ি টানাটানির সুর ভালোবাসা। মৃত্যুকে সরিয়ে দিলে বাঁদিকে দড়ি ধরবে কে? টান দেবে কে? আর টান না দিলে, ন্যাতানো দড়িতে হাই ওঠার আওয়াজ, সেকি আর শুনতে ভালো লাগে বলো? নরম মাটি পাকা হলে ঘর দাঁড়ায়। সে ঘর ভাঙে বলেই তাকে গড়ে তোলার এত সুখ, তাকে টিকিয়ে রাখায় এমন গর্ব। ভালোবাসা মরণশীল, তাই এমন আনন্দ তাতে।
ভালোবাসা সুন্দর বলেছিলে। সে আর এক ডাঁহা মিথ্যা। সুন্দর তো মিথ্যা, যা কিছু সাজানো পরিপাটি। কালবৈশাখীর পর তোমার সাজানো বাগানকে দেখেছ? উল্টানো টব, ছড়িয়ে ছিটিয়ে তোমার গোলাপ, পারিজাত.. হো হো হো.. তুমি বললে ঝড় এসেছিল, আমি বলব, প্রেম এসেছিল। নিঃশব্দ চরণে না গো, রণ দুন্দুভি বাজিয়ে। টের পেলে না। ঘরে আগল দিয়ে নিজেকে বাঁচালে, নিজেকে হারালে। নিজেকে নিঃস্ব বলে জাহির করলে ঘরের কোনায় হীরে-জহরত লুকিয়ে। ঝড়ে তোমার আবরণ উড়ল, উলঙ্গ হয়েও সারা গায়ে পরে রইলে গহনা। মিথ্যার উপর কি আস্থা তোমার, কি দম্ভ!
ভালোবাসায় সুখ বলেছিলে। তাই এত ভীতু তুমি। ভালোবাসা সুখ নয়। সুখ নিরাপত্তায়। ভালোবাসা নিরাপত্তার কাগজের নৌকা নদীর স্রোতে ভাসিয়ে দেওয়ায়। "যে জন দেয় না দেখা, যায় যে দেখে".. কি দেখে? দেখে না, তাকায়। জগন্নাথের চোখে পলক নেই, দেখোনি? কেন বলতো? তুমি বলবে, তিনি নির্নিমেষ তোমায় নজরে রাখছেন। তুমি লোভী, তাই অমন বোধ তোমার। যদি লোভের ঘরে আগুন দিতে তবে দেখতে ওই নির্নিমেষ চোখ দেখে না, তাকায়। সে তাকানোতে চোখ রাখতে যদি, তুমিও হতে অপলক, সমস্ত অশ্রু পাখির পালকে ভিজে যেত সূর্যস্নানে। তুমি পুড়তে পুড়তে বুঝতে, তুমি ভালোবাসা হয়ে যাচ্ছ। নদীর মত।