ভাষার জঙ্গলে বিভ্রান্ত বুদ্ধি
বসল চিরবহমান হৃদি-নদীর তীরে
শ্রান্ত মন শান্ত হল
ভিতরে কে গায়?
সমস্ত প্রাণ উজাড় করে নামল জলে
তখন সান্ধ্যসূর্য সদ্য নেমেছে ঝোঁপের আড়ালে
তিরতির করে কাঁপছে ঝাউপাতার ঝালর
পাখির দল মুখরিত ঘরে ফেরার বিহ্বল আনন্দে
কে আসলেন স্নানে?
দীর্ঘাঙ্গ, বল্কলধারী জটাজুট মাথা?
বললাম, কে তুমি?
বললেন, আনন্দ
বললাম, কার আনন্দ?
বললেন, সবার
বললাম, আমারও
বললেন, সবার
তবে আমি কেন নিরানন্দে?
তাকালেন মুখে, চোখে রাখলেন চোখ
বললেন, যেহেতু তুমি বিচ্ছিন্ন
বললাম, কিসের থেকে?
বললেন, সত্য থেকে
সত্য থেকে!
কিসে সে সত্য?
সেই সত্য যা চিরন্তন প্রাণে তোমার
সেই সত্য যা চিরন্তন প্রাণে সবার
কি সে?
তাকে বলা যায় না কথায়
তাকে বাঁধা যায় না বুদ্ধিতে
তাকে কলুষিত করা যায় না মোহে
তবে উপায়?
হও মোহমুক্ত
কিসের মোহ?
অন্ধকারের কোন সংজ্ঞা হয় না
সে দখল করে ততটাই যতটা আলোর অভাব
তবে বলো আমায়, কিসে যায় এ মোহ?
জাগরণে
কিসের ঘুম আমার?
সুখ আর অহমিকার অজ্ঞানতার
কে ভাঙাবে ঘুম?
দুঃখ, মহাকালের রথের পথ সে
দুঃখ কি সংসারে পাইনি আমি?
এ দুঃখ সে দুঃখ নয়
তবে?
সে দুঃখ বাইরেকে না পাওয়ার
এ দুঃখ আপনাকে না পাওয়ার
আমার কর্তব্য তবে কি?
অপেক্ষা করো, রাখো পথ পরিস্কার
সে মহাকালের দুঃখের রথ আসুক বিনা বাধায়
জয়ী করো তাকে,
তার জয়েই তোমার জয়,
সেই তোমার পরম পরিপূর্ণতা
জয় হোক জয় হোক জয় হোক