Skip to main content
 
 
        রাস্তাটা মোড় ঘুরিয়ে চলে গেল। একটা কাক উড়ে উড়ে অনেকক্ষণ বসার জায়গা খুঁজে চলেছে। নিতান্ত ক্লান্ত না হলে যে ভিখারিটা হাঁটা থামায় না, সেও এসে বসেছে বেঞ্চে। চা ছাঁকা হচ্ছে। ভিড় সামনে। শীতের সন্ধ্যা অন্ধকারকে জাপটায় বেশি। একটা ট্রেন খুব জোরে হুইসেল দিয়ে ছুটে বেরিয়ে গেল। ভিখারির গায়ে ময়লা কম্বল। খালি কালো পা, আঙুলগুলো দূরে দূরে, যেন বিচ্ছিন্ন দ্বীপ এক একটা। চা নিল কয়েকটা আঙুলে জাপটে। ধোঁয়াটা উড়ে উড়ে ওর নাকের কাছ দিয়ে চোখের উপর দিয়ে চলে যাচ্ছে। তার উপর বাল্বের আলো, একটা মায়াবী আস্তরণ। ভিড়ের মধ্যে যত কথা, সব কথা বাতাসে মিলিয়ে যাচ্ছে। খুব গভীর একটা শ্বাস নিল লোকটা। উঠে দাঁড়াল। 
        একজন বলল, তুমি এবার ভোটে দাঁড়াবে তো? প্রধানমন্ত্রী হবে না? 
        লোকটা মুখ বেঁকিয়ে বলল, বাল।
 
        পাশের থেকে একজন বলল, দাদার এককালে ব্যবসা ছিল। সব চৌপাট হল। দাদা পাগল হল।
 
        লোকটা শুনল না। ধীরে ধীরে অন্ধকারে মিলিয়ে গেল। চায়ের দোকানের ভিড় আরো বেড়েছে। তার বসে থাকা বেঞ্চের জায়গাটায় একজন পুরুষ্ট গোঁফ, খাকি পোশাকের পুলিশ বসে। চা নিয়ে ভাঁড়ে ফুঁ দিয়ে পুলিশটা বলল, ও পাগলটার বউটা মারা গেল আজ, শালা বেঁচে গেল।
 
        চায়ের ধোঁয়া উড়ে উড়ে কুয়াশায় মিলিয়ে যেতে লাগল। যেন ও পাগলকে খুঁজে বার করবে, কিছু বলবে না, পাগলের সাথে সাথে হাঁটবে সারারাত, যতক্ষণ না শুকতারা ওঠে।