Skip to main content
 
 
 
        যানজটের কোনো উদ্দেশ্য নেই, অর্থ নেই। তবু হয়। এরকম অনেকগুলো অর্থহীন যানজট পেরিয়ে, কিছু যানজট এড়িয়ে একটা বিস্তীর্ণ মাঠে এসে বসলাম। আকাশ আর মাটির কোনো তাড়া নেই। ওরা দুজনেই সময়কে কোলেকাঁখে করে বেড়িয়েও যেখানে সেখানে নামিয়ে রেখে যায় অবহেলে। আজও নামিয়ে গেল আমারই চোখের সামনে। সময় আমার সামনে দাঁড়াল কয়েকটা ইতস্তত শরতের মেঘ আর বর্ষার মেঘের দাবার ঘুঁটি সাজিয়ে, আকাশের মেঝেতে। কে চেকমেট হল? বর্ষা না শরৎ? 
        বসে থাকতে থাকতে কয়েক পশলা বৃষ্টি হল। কোথাও যানজট ছাড়ল মনে হল। আটকা পড়া বাতাস কোথা থেকে ছাড়া পেয়ে এই ঘিঞ্জি বাড়িগুলো, ট্রামরাস্তা, অলিগলি ঘুরে মাঠে এসে কয়েকটা ডিগবাজি খেলো। আমায় ছুঁয়ে বলল, এসবই অর্থহীন। 
        আমি বললাম, হ্যাঁ, ওই যানজটের মত আর আমার এই ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টির আবদার মেটাতে মাঠের বেঞ্চে বসে থাকার মত।
 
        সন্ধ্যে হব হব, আকাশ হাত বাড়িয়ে সময়কে বলল, আয় কোলে আয়, যেতে হবে। মাটি সময়কে আলতো করে ডুবন্ত সূর্যের রথে তুলে দিল। দেখতে দেখতে সারা আকাশে গুনগুন নিঃশব্দ আওয়াজে তারারা ভরে গেল। আমি একটা একটা তারা জুড়ে একটা একটা শব্দ লিখতে চাইলাম। কিছু একটা লিখতে লিখতেই তারাগুলো সরে সরে যেতে লাগল। যেখানে লিখলাম 'ভালোবাসা', তারা সরে সেখানে হল 'শূন্যতা'। যেখানে লিখলাম, 'আশা', তারা সরে হল, 'উদাসীনতা'। দেখতে দেখতে ভোর হল। শুকতারাটাও গেল মিলিয়ে, আমি শুকতারা দিয়ে 'ভবিষ্যৎ' এর '' লিখেছিলাম। 
        ভোর সময়কে মাঠে নিয়ে এলো কোলে করে। ভোরের বাতাস একটা শিরীষ গাছকে আন্দোলিত করে বলল, আজ অনেকগুলো যানজট হবে, অর্থহীন। আমি হেসে বললাম, আসলে সবই অর্থহীন। সে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল, তোমার এই হাসিটা ছাড়া।