- রাজা, উহাদের আপনার মঙ্গলহস্তে বিশ্বাস নাই।
- উহারা তবে নাস্তিক। ঈশ্বরের মঙ্গল ইচ্ছা রাজার মাধ্যমে সাধিত হয়। নহিলে ত্রিভুবনেশ্বরের সময় কোথা এই ক্ষুদ্রখণ্ডের গোলোযোগ লইয়া ব্যস্ত রহেন। তাই রাজার উপর বিশ্বাসের অভাব প্রকারান্তরে ঈশ্বরের উপর বিশ্বাসের অভাব। অতএব উহারা নাস্তিক।
- তবে আপনি এখন কি করিবেন?
- নীরব রহিব। ঈশ্বরের মত নিরুত্তর রহিব।
- উহারা বলিবে আপনি নিষ্ঠুর।
- সে ঈশ্বরকেও বলে।
- উহারা বলিবে, আপনি উদাসীন, পক্ষপাতদুষ্ট।
- সে ঈশ্বরকেও অনেকেই বলিয়া থাকে।
- তবে আপনি ঈশ্বর হইবেন?
- বিলক্ষণ!
প্রজারা বলিল, তবে আমরা খাইব কি?
রাজার অনুগামীরা বলিল, ভক্তের কোনোদিন অভাববোধ হয় না। ভক্তিতে রহিবে, আনন্দে রহিবে। চক্ষু অপেক্ষা চক্ষুর পল্লবে নির্ভর করিবে বেশি, উহাকে আবরিত রাখিলে মনের মধ্যে রাজাকে পাইবে। রাজাকে পাইলেই ঈশ্বরকে পাইবে।
নিন্দুকে প্রশ্ন করিল, ঘর্মের অভিমান কি রত্নসিংহাসনের অভিমানের চাইতে ক্ষুদ্র? মহাকাল কি বলে?
রাজা কহিল, উহাদের দেশদ্রোহী বলিয়া অন্ধকূপে নিক্ষেপ করো।
এক একদিন রাজা মধ্যরাত্রে চমকিয়া উঠে রাজবৈদ্যকে ডাকাইয়া আনেন। বলেন, বৈদ্য, ঘুমের মধ্যে অন্ধকারে কাহাদের চীৎকার শুনি, উহারা নাস্তিক, না দ্রোহী?
বৈদ্য বলেন, উহা ঈশ্বরের লীলা।