বুড়ি শ্রীরাধাগোবিন্দকে প্রণাম করল হাতজোড় করে। যেমন করে। বলল, আজ তোমায় কিছু দেব না ঠাকুর। দশটাকা আঁচলে বাঁধা আছে। রথের মেলা বসেছে তোমার মন্দির ঘিরে। নাতিটার জন্য কিনে নিয়ে যাব গজা। তুমি মনে কোরো না কিছু যেন।
বুড়ি সেদিন আরো কয়েকটা বেশি প্রণাম করে মন্দির থেকে বেরোলো। বাইরে বসে পূজারীর বউ, এক গামলা কাঁঠালের কোয়া নিয়ে। আজ এই প্রসাদ।
বুড়ির লজ্জা লাগল। একটা টাকাও দিল না ঠাকুরকে, কী মুখে নেয়! ভিড় ঠেলে এড়িয়ে যাচ্ছিল। পূজারীর বউ ডাকল, ও ঠাকুমা, প্রসাদ নাও….নাতি এসেছে দেখলাম যে….আরো দুটো নিয়ে যাও….কী মিষ্টি কাঁঠাল গো…..
কী লজ্জা! বুড়ি নিল হাত পেতে। চারটে বড় বড় কোয়া। কী সুবাস! শ্রী গোবিন্দের দিকে তাকালো। বড় লজ্জায় ফেল ঠাকুর!
পূজারী বলল, ঠাকুমা..কাল এসে একটু চন্দন বেটে দেবে….মেয়েটা ছুটি নিয়েছে…..কমিটি তোমাকে কুড়িটা টাকা দেবে.….পারবে?
বুড়ি তাকালো গোবিন্দের দিকে। কী লজ্জায় যে ফেলো ঠাকুর! টাকা কবে চাইলাম?
বুড়ি বলল, আসব। কিন্তু টাকা লাগবে না। এতো সামান্য কাজ!
পুজারী বলল, তোমার হকের টাকা….নেবে না কেন?
বুড়ি বলল, তোমার ঠাকুরও তো তার হকের কত কী ছেড়ে দেয়…তার যা হক…দিই আমরা?….আমিও না হয় দিলাম এটুকু ছেড়ে…..ঠাকুরকে চন্দন বেটে টাকা নিতে পারব না গো…….