Skip to main content
gosai effect

শ্রীমান আলেখ্য বোস, নানান ব্যস্ততার কারণে কাল অনুষ্ঠানে যেতে পারেননি। কিন্তু সে হলে কি হবে, হাতে বই পেয়ে, দু পাতা পড়তে না পড়তেই ভাবে একদম বিভোর। হবে নাই বা কেন। আসক্তি বলতে তো কুরকুরে, ক্যাডবেরি আর আক্রিমের বাইরে তেমন কিছুই নেই। সেও মন ভরে যাওয়া অবধি। তারপর সে সব বস্তু পেটে না গিয়ে গায়ে, মাথায়, পেটে, চাদরে, বালিশের ওয়াড়ে, সামনের মানুষের গালে, মাথায় যায়। তারপর তাকে ধরে বাথরুমে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে যত ধোয়ানো হয়, তত সে আরো ধুতে চায়। এখন গায়ে লেগে থাকা জল আর কতজলে ধোয়া যায়। শেষে আবার তাকে জোর করে ধরে জল থেকে তুলে আনা হয়।

তো এমন লীলাময় পুরুষের তো গোঁসাই এফেক্ট হবেই। তাঁর পাঠের পরেও যে পাতার সংখ্যা অক্ষুণ্ণ আছে সেও এক ভাগ্যের ব্যাপার।

এখন প্রশ্ন হল, এই একতারাটি এলো কোত্থেকে। এটা বাড়ির এককোণে ঝুলমাখা হয়ে পড়েছিল। এ বাজানোর নয়, সাজানোর বস্তু। সুরের ভারে তার ছেঁড়ার উপক্রম হয়। কি করে শ্রী বোস মহাশয়ের চোখে পড়ল। ব্যস, মুহূর্তে ঝুলকালি সরিয়ে তার একটা গতি করতে হল। তারপর?

তারপর সে ভাবের রাজ্যে প্রবেশ করে কার সাধ্যি। হাত কাটার ভয়, ইঞ্জেকশনের ভয়… সব ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে তিনি মগ্ন হলেন।

যদিও ভাব বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি এই রক্ষে। "জয়দার" পকেটস্থ লজেন্সের প্যাকেটের খড়খড়ে আওয়াজে ধ্যানভঙ্গ হল। তিনি একতারা রেখে দুই মুঠো লজেন্সে মনোনিবেশ করলেন। এবং দান যে একটা পূণ্য কর্ম, সে তত্ত্বকে নস্যাৎ করে, লজেন্সগুলোর রক্ষায় মন দিলেন।

একতারা পড়ে রইল উলটে। রামকৃষ্ণদেব বলেন, ঈশ্বরের বালকস্বভাব। সে তো বটেই। একতারার অভিমান বালক বোঝে না। একতারাকেই মেনে নিতে হয়। এই মেনে নিতে নিতেই জীবন সিঁড়ির ধাপ পেরোয়। চুলে পাক ধরে। সায়াহ্নে এসে আবার করে বোধ হয়, জীবনটাকে বুড়োটে বুদ্ধিতে আসলেই বোঝার কিছু নেই। বালকস্বভাবই একমাত্র উপায়।