Skip to main content

গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক। প্রতিবারই ধাক্কা দেন। বইতে, আলোচনায়, সাক্ষাৎকারে, ভাষণে। চিন্তার ধারাটা ছিন্ন হয়, নয় তো জেগে ওঠে। গায়ত্রী ভাবিয়ে চলেন। ঝাঁকিয়ে চলেন। জ্ঞানতত্ত্ব, epistemology -র বাংলা করতে গিয়ে দাঁড়ায়। কোনো বিলাসিতা নয়। ক্ষুধাপীড়িত জ্ঞানান্বেষণ শুধু না, সে জ্ঞানের গভীরে জ্ঞানের প্রগতির ধারাটাকেও ধরতে চাওয়া, বুঝতে চাওয়া। এর থেকে সৎ, পবিত্র অনুভূতি একজন ধীশক্তি সম্পন্ন মানুষের আর কিই বা হতে পারে? 
        হতে পারে আমি সব বিষয়ে সহমত নই। এ সমস্যার সমাধান বহু আগে অ্যারিস্টটল করে গেছেন। বলছেন শিক্ষার আনন্দই হল, আমার আগ্রহ বহির্ভূত বিষয়েও আনন্দ পাওয়ার ক্ষমতা। তারও আগে মহাবীর বলছেন, অনেকান্তবাদী হও। অর্থাৎ কোনো একটা বস্তুকে নানা দৃষ্টিভঙ্গী থেকে দেখা অভ্যাস করো। গায়ত্রীর ভাষায় শুনলাম, resonate করো, অণুরণিত হও। ঠিক তাই। যখন উপনিষদ থেকে রাসেল পড়ছি, তখন এই অণুরণিত হওয়াটাই তো সম্বল। কিন্তু মুশকিল হল, জ্ঞানের তৃষ্ণা যদি শুধু 'কাজে লাগে কি না লাগে' এই সীমানায় আটকে পড়ে তখন জ্ঞানের আনন্দ থেকে মানুষ নিজেকে বঞ্চিত করে। অণুকরণের দ্বারা, অথবা দাগের উপর দাগ বুলিয়ে বাকি জীবনটা কাটাবার ফিকির খোঁজে। অণুরণিত না হতে চাইলে অণুকরণের বিকল্প ছাড়া আর কি আছে? 
        তাই গায়ত্রী বলেন নিজেকে ভাঙার জন্য প্রস্তত থাকতে। কিছু একটা হয়ে গেছি, বা হয়ে বসে থাকলে চলবে কি? প্রতি মুহূর্তে ভাঙার জন্য তৈরি থাকতে হবে। বলছেন, সংজ্ঞা তো ভাঙার জন্যই। কোনো জ্ঞানকেই আবদ্ধ করা কি সম্ভব কোনো? সব জ্ঞানই কি অভিজ্ঞতা? আবার অভিজ্ঞতা ছাড়া কি জ্ঞানের পূর্ণতা সম্ভব? নারীবাদীর বিভাজন রেখাও কি একটা বিলাসিতা? সেই বিভাজন রেখার সুযোগে বিশেষ একজাতের মানুষকে কি তুরুপের তাস করে ফেলা যায়? 
        উত্তর-ব্যাখ্যার থেকেও বেশি অনুপ্রাণিত করে চলার শক্তিটা। স্বচ্ছধারাটা। আত্মবিশ্বাসের উজ্জ্বল জ্যোতিটা। সত্য উচ্চারণের অনন্য আনন্দটা। তাই শেয়ার করলাম। নীচে কিসব হাবিজাবি লেখা থাকলেও আদতে সাক্ষাৎকারটা ইংরাজীতে।