ভাঁড়
বেশ রাতে স্টেশানে নামে। বাড়ি ফেরার পথে নেয় একভাঁড় চা রোজ। শক্ত করে আঁকড়ে থাকে গরম চায়ের ভাঁড়। জীবনে বেঁচে তার এই একটাই উষ্ণতা অবশেষে।
প্রাণের প্রাণ
প্রতিটা বাঁকে তুমি একা। প্রতিটা ক্ষতে তুমি মাটির প্রলেপ লাগিয়েছ একা। রক্তগুলো মাটির মধ্যে বানিয়েছে নতুন নতুন নদী। তারাও বয়ে চলেছে একা। তোমার চোখের প্রতি উন্মীলনে জাগে পিপাসা। তোমার চোখের প্রতি নিমীলনে আশ্রিত অপেক্ষা। তুমি জেনে গেছ, সব কুঁড়ি ফুল হয় না। সব ফুলে ফল হয় না। তবু তুমি গোধুলির রঙ গলা নদীতে যখন শেষ স্নান সেরে ওঠো, অস্তগামী সূর্যের কপালে দাও আশিস চুম্বন। তোমার ভেজা শরীরের জলের রেখায় ফোটে
নির্বিষাদ
বন্ধ দরজা
বন্ধ দরজা। স্বপ্নগুলো পায়চারি করছে। দরজার ওপাশে আলো। দরজার এপাশে জায়গা কম। স্বপ্নগুলোর ধাক্কাধাক্কিতে মাথায় ফেট্টি।
লোকটা পানশালায় বসে, ফাটা মাথায় হাত বুলোতে বুলোতে, স্বপ্নগুলোকে স্বপ্ন দেখিয়ে ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা করে।
সময় সারাটা দেওয়াল জুড়ে টিকটিকিগুলোর সাথে ছোঁয়াছুঁয়ি খেলে।
রাঙিয়ে গেল হৃদয় গগন
অভিসার
সমুদ্রস্নান সেরে সে তীরে বসেছিল। ভেজা কাপড় শুকিয়ে নিচ্ছিল ভাগাভাগি করে, কিছুটা রোদ, কিছুটা হাওয়া। তার চোখের মণিতে যে সাগরের ঢেউ আছাড় খাচ্ছিল, সে সাগরের সাথে তার বুকের সাগরের কোনো মিল নেই, আবার আছেও। তার মনের মধ্যের সমুদ্র বাইরের সমুদ্রের সাথে কথা বলছিল। ভিতরের সমুদ্র কথা করল শুরু।
-তোর এত ঢেউ? কে যোগায়?
-বাতাস, তোর জল এত স্থির কেন?
শেষ বসন্ত
বসন্তকে বলেছিলাম, আমার কাছে এসো না। বড্ড বেশি শৌখিন তুমি, আমার সাথে বনবে না।
শুনল না। ষড়যন্ত্র করল আমার জানলার পাশের আমগাছটা। এক ঝাঁক মুকুল সাজিয়ে, গন্ধে মাতিয়ে, ওঁত পেতে বসেছিল আমারই জানলার পাশে।
জানতাম কই? ভোরবেলা জানলা খুলতেই হল অতর্কিতে আক্রমণ। বসন্ত এল ঘরে। বসল আমারই বিছানায়, আমার মুখোমুখি।
বললাম, কি চাও?
চাঁদ ও কিছু প্রশ্ন
পূবাকাশে উঠল একলা চাঁদ।
পূর্ণ চাঁদ।
মনে হল সঙ্গী পেলাম। তাকালাম হেসে। সেও তাকাল প্রসন্ন মুখে। জানতে চাইলাম, "ব্যস্ত? কিছু কথা বলা যাবে?"
সে নীরবে জানাল সম্মতি।
"জান, একটা কথা তোমাকে দেখলেই মনে হয়।
...