Skip to main content
চারাগাছটা মরুভূমি পেল। 
নদী না, পুকুর না, খাল-বিল কিছুই না, 
শুধু মরুভূমি পেল। 
চোখ মেলে দেখল চারিদিকে শুধু বালি আর বালি। 
মাথার উপর গনগনে সূর্য্য। 
বালি কাঁটাগাছ নুড়ি পোকা সবাই অপেক্ষায় থাকল 
কখন নেতিয়ে পড়বে তার প্রাণ। 
এ যে অনধিকার প্রবেশ! 
ওদের আক্রোশ উঠল বেড়ে। 
চারাগাছটা চারিদিক চেয়ে হাত বাড়াল, 
কেউ এগিয়ে এলো না। 
অস্ফুটে বলল সব, মরো! 
চারাগাছ শূন্যে চেয়ে বলল, হা ঈশ্বর! 

এমন সময় কি ঘটল! 
হঠাৎ কোথা থেকে উড়ে এল একটা ছোট্ট মেঘ। 
আড়াল করে দাঁড়াল চারাগাছের মাথা। 
দিল অল্প একটু জল, আর একটু ছায়া। 
চারাগাছ উঠল সতেজ হয়ে। 
তার পাতাগুলো হল নিবিড় সবুজ, 
দেখে মেঘের ছোট্ট বুক ভরে উঠল ঘন হয়ে। 
দেখে সবার চোখ হয়ে উঠল রাঙা, এত স্পর্ধা! 
চারিদিকে উঠল হিংসার ঝড়- 
কিন্তু ছোট্ট মেঘ উড়ল না, 
চারাগাছও উপড়াল না। 
উত্তপ্ত হিংসা হয়ে উঠল ঠান্ডা উপেক্ষা। 
মেঘ আর গাছ হাসল। 

এরপর অনেকদিন গেল। 
চারাগাছ হল তরুণ, 
মেঘ হয়ে উঠল তরুণী। 
তরুণ গাছ মাটির নীচে অনেক গভীরে পেল জলের সন্ধান। 
তার তরুণ সতেজ ডালপালা নিয়ে স্পর্শ করল মেঘকে, 
আগলে রাখল তাকে। 
বলল, "তুমি আমার, শুধুই আমার।" 
মেঘের বুক হয়ে উঠল সজল।
তার দু'চোখ থেকে কয়েক ফোঁটা জল পড়ল সবুজ পাতায়।
গাছ তাকে আলিঙ্গন করে বলল, "পাগলী।"

সেদিন তাদের বিয়ে।
আমারও নিমন্ত্রণ।
তরুণ গাছ আমায় করল আলিঙ্গন,
বলল, "তুমি এসেছ!"
তার সজল ছোঁয়ায় আমার নি:স্ব বুক উঠল ভারী হয়ে।
বললাম, "আসব না!
আরো কত মরুভূমিতে বানাতে হবে সবুজ বাগান।
তোমার ছোঁয়া না নিয়ে গেলে তারা আমায় করবেনা বিশ্বাস!"
মেঘের পাশে বসলাম, বললাম, "ধন্য তুমি!
একবিন্দু জল আমায় দিয়ো।
আমি নিয়ে যাব অনেক মরুভূমিতে।"
সে হাসল।
বলল, "নিয়ো।" 
 

(প্রেরণা: সু আর অ)