মৃত্যু মায়ের কাছে এসে দাঁড়ালো। মা প্রদীপ জ্বেলে বসে। মৃত্যু তার সন্তানকে নেবে। তার সময় হয়েছে।
মা বলল, মায়ের পুজো চলছে। আজ অমাবস্যা। চারদিক অন্ধকার। আজ যাও। ও অন্ধকারে পায় ভয়।
মৃত্যু বলল, ওর সময় এসেছে। ছেড়ে দাও ওকে।
মা তাকালো জগদম্বার দিকে। জগদম্বার চোখ চিকচিক করে উঠল।
মা বলল, ওকে নিয়ে যাবে মা! তুমি কিচ্ছু বলবে না?
======
পরের বছর একই তিথি। সন্তান হারা মা বসে অমাবস্যার রাতে, রাস্তার ধারে। যাবে না মন্দিরে। গভীর অভিমান। কতদিন শ্রবণ শূন্য "মা" ডাকে।
মধ্যরাতে আরতি শুরু হল। ঢাক, কাঁসর, শাঁখ বেজে উঠল।
মা মন্দিরের দিকে তাকিয়ে বলল, পাষাণী!
======
হঠাৎ আকাশজুড়ে মা শুনল কার খিলখিল হাসি। তারায় তারায় লাফিয়ে লাফিয়ে কে যেন ছুটছে। সে বলছে, মা আমার দিকে তাকা… আমার অন্ধকারে গেছে ভয়…. এদিকে দেখ… এই তো আমি….. এই তো তোর মন্দিরের মা… আমার হাত ধরে…. দেখ দেখ মা…. তাকা!
মা তাকালো ঘাড় উঁচু করে, অমাবস্যার অন্ধকার এলোকেশী আজ…. মা হয়ে…. সহস্র সন্তানদল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তারা হয়ে মায়ের সঙ্গে সঙ্গে চলেছে….. কি আনন্দে……
========
সে এসে দাঁড়ালো মন্দিরের দরজায়। তাকালো জগদম্বার দিকে। তার অভিমান ভেসে যাচ্ছে দু’চোখের জলে….. প্রদীপের আলোয় মায়ের বিশাল ছায়া কেঁপে কেঁপে উঠছে দেওয়ালজুড়ে….. মা এলোকেশী।
একজন এসে হাতে দিল প্রসাদ…. বলল, এতদিন পরে আসতে হয় মা!…..
মা আবার তাকালো জগদম্বার দিকে। জগদম্বার চোখে অভিমান। এ অভিমান তার চেনা।