সৌরভ ভট্টাচার্য
1 February 2019
শহরের শেষ পাঁচিলটাও লাফিয়ে পড়ল ওপারে। একই দারোয়ান। একই মালী। একই ফুলের সারি।
রাস্তা পার হয়ে একটা মাঠে এসে বসল। সব পাঁচিল লাফ দেওয়া হয়ে গেছে। সব একইরকম দারোয়ানের চোখ ফাঁকি দেওয়া হয়ে গেছে। এবার?
ছেলেটা মেয়েটাকে ডাকল। মেয়েটা পাঁচিলের মাঝখানের দরজা দিয়ে মাথা নীচু করে বেরিয়ে এলো। লজ্জায় নয়, দরজাটাই নীচু। মুখে একটা নীল কাপড় জড়ানো, আড়াল করতে নয় নিজেকে, বাইরে চড়া রোদ।
ছেলেটা বলল, এবার? কোথায় লুকাবে? সব পাঁচিল লাফানো হয়ে গেল তো!
মেয়েটা বলল, চলো হারিয়ে যাই...
ছেলেটা বলল, কোথায়?...
মেয়েটা নীল কাপড়ে মুখ ঢেকে চুপ...গরমে না...উত্তর নেই যে...
একটা ঘাস ফড়িং গভীর রাতে তার বাচ্চাগুলোকে এই গল্পটাই বলছিল। আর বলল, এককালে ভালোবাসা মানে অজানা ছিল...যখন মানুষেরা ঘাসের কথা, চাঁদের কথা, সমুদ্রের কথা বুঝত...এখনকার মত নয়...এখন সব কিছু বড্ড জানা...সব পৃথিবীটাই মানচিত্রে...বিচ্ছিরি...কেউ চাইলেও কলম্বাস হতে পারে না...ভালোবেসে হারাতে পারে না...ডুবোপাহাড়ের মত সব জায়গায় জ্ঞানের পাহাড়...
ভোর হল। শিশিরকণা জ্বলে উঠল সূর্যের আলোয়। ঘাসফড়িং তার বাচ্চাগুলোকে নিয়ে মাঠে ঘুরতে এলো। তাদের সারাগায়ে শিশির লাগল। ক্রমে সূর্যের তেজ যত বাড়ল শিশির শুকিয়ে যেতে লাগল।
ঘাস ফড়িং শুকনো হতে হতে বাচ্চাদের বলল, একমাত্র মৃত্যু ছাড়া...তবে তাড়াহুড়ো কোরো না...তার আগে সব কিছুই এমন...একইরকম...