একজন অত্যন্ত প্রাণচঞ্চল বাচ্চা মেয়ে আমাদের কলকাতার বুকে মৃত্যুর সাথে লড়ছে। বাবা মা তার গলার নলি কেটে তাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে নিজেরাও সরে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু নিজেরা এখন বিপদসীমার বাইরে। বাচ্চাটা ঘোর সংকটে। সে সংকটে তো তার শরীরটা। তার যদি চিন্তা করার ক্ষমতা থাকত, জানি না এখন আছে কিনা, সে কি ভাবত? বাবা-মায়ের হাতে ক্ষুর? কারণ তারা আর বাঁচতে চায় না, তাকেও বাঁচতে দিতে চায় না।
আত্মহত্যা, হত্যার চেষ্টা - কার সাজা কতবড় জানি না। কিন্তু একটা সমাজ সাক্ষী থাকছে। একটা সময় সাক্ষী থাকছে। বিপন্নতা অর্থহীনতায় নয়, একটা সমাজের হৃদয়হীনতায়। মানুষ বিজ্ঞানে বাঁচে না শুধু, বিশ্বাসে বাঁচে। এই কথাটা তখন বোঝা যায় যখন একজন রিক্ত হতে হতে একটা সমাজকে প্রতিযোগীতার আখড়া না দেখে বেঁচে থাকার সহায় ভাবতে শেখে। না, আমাদের সমাজের উদ্দেশ্য যাই হোক, মানুষ ঘর বেঁধেছিল, সমাজ গড়েছিল সহায়তাকেই মূলমন্ত্র করে। এটা ক্লিশে জানি। পায়ের নীচের চামড়াটা গালের চামড়ার মত স্পর্শকাতর হয়ে উঠলে হাঁটা যায় না, তাও জানি। কিন্তু সারা শরীরটা যদি পায়ের নীচের চামড়ার মত স্থূল, অসংবেদনশীল হয়ে ওঠে তবে তা সত্যিই চিন্তার।
বাচ্চাটার জন্য প্রার্থনা করবেন, অন্তত শুভকামনা। ওর পূজোর জামা কেনা হয়েছিল কিনা জানি না, ও একটাও প্যাণ্ডেল বাঁধা দেখেছিল কিনা জানি না, কিন্তু এতবড় একটা উৎসবের মুখে একটা ছোট্টো প্রাণ মৃত্যুর সাথে লড়বে? এতবড় সারপ্রাইজের ধাক্কাটা যেন সে কাটিয়ে ওঠে। জীবনে আরো বড় সারপ্রাইজ আছে, ও যেন জানার সুযোগটা পায়।
সৌরভ ভট্টাচার্য
28 September 2018