এবছরের মত খেলাটা শেষ হল। বড়দের খেলা। চালাকদের খেলা। ধনীদের আমোদ। নেতাদের শক্তি প্রদর্শন। বোকাদের আবেগের তুবড়ি, জ্বলে ধাঁধাঁ লাগিয়ে চোখে, ফুরালো এ বছরের মত। কাছের সব কিছু ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল, এত আলো। এবার শ্লথ পায়ে আসবে অবসাদ। উত্তেজনার পর যা অবধারিত। কাজের গতি বেগ ফিরে পেতে নেবে আরো কয়েকদিন। যেন সদ্য জ্বর ছাড়া দুর্বল ছেলে, শয্যা ত্যাগ করে বহুদিন পর বসেছে বারান্দায়, ক্লান্ত অবসন্ন চোখে তাকিয়ে দেখছে চিরপরিচিত যা কিছুকে আবার।
জয়-পরাজয়, শুভেচ্ছা, প্রীতি পালক গজানো পিঁপড়ের মত উড়ে বেড়াবে কদিন। যেন আকাশে উড়বে এমন তার হাবভাব, কিন্তু উড়বে না, যখন তখন নাকে চোখে হাতে বসে বিরক্তির কারণ হবে। ঘন ঘন আন্তর্জালতন্ত্রের ঢেউ ঠেলে উপচে পড়বে ভালোবাসা, যে ভালোবাসা ময়রার মিষ্টির মত, মূল্য আছে, স্নেহ নেই।
তারপর বাঁশগুলো থাকবে ডেকরেটার্সের গুদোমে, সাথে তিরপল, আলো, আরো নানা আড়ম্বরের উপকরণ। মাটি মিশবে জলে। রঙে হবে দূষণ। যে পুরোহিত আয়ু-যশের পথ বানিয়েছিল অষ্টমীর সকালে, সে নিজের পেটের ভাত জোগাড় করতে দৌড়াবে, রেশনের লাইনে দাঁড়াবে, মন্ত্রগুলো কানের পিছনে জমে থাকা ময়লার মত অসুন্দর। প্রার্থনাও ততদিনে বাসি।
এই তো কথা। উপার্জন? হল কিছু মানুষের, বন্যায় যেমন কিছু মানুষের জলের অভাব ঘোচে। তাই আমি কাউকে 'শুভ বিজয়া' বলি না। বড় হয়ে গেছি, অমন মিথ্যাটা না বলেও শুভ চাইতে শিখেছি।
সৌরভ ভট্টাচার্য
19 October 2018