পুজোর ডালা আটকে দিল পুরোহিত। বলল, প্রণামী না দিলে হবে না।
মাথাটা গরম হল। পঞ্চাশ টাকার ডালা কিনল যে!
দশটাকা নিয়ে ডালা ছাড়িয়ে বাইরে এলো। টোটোর একপাশে রেখে বসল। ভাড়ার অপেক্ষায়। বাড়ির দিকে একটা ভাড়া পেলে শুধু শুধু যাওয়া হয় না আর।
আসে না কেউ। প্রার্থনা করল। একজন অন্তত আসুক। অর্ধেক রাস্তা অন্তত যাক।
তাও কেউ এলো না। খিদে পাচ্ছে। দুপুর একটা তো হবে!
পুরোহিত মন্দির বন্ধ করে বাইরে এলো। এসেই বলল, টোটো.... বকুলতলার মোড়.... যাবে?
যাব তো। ভাড়া দশ টাকা।
টোটো স্টার্ট দিল। চালক বলল, ওদিকেই থাকেন?
পুরোহিত বলল, না রে ভাই... মেয়েটার পড়ার মাষ্টার জোগাড় করে ঘরে না ঢুকলে আজ ভাত জুটবে না... পড়ানোর যা খরচ... বিয়ে করেছ? বাচ্চা আছে?
আছে তো.... এইটে পড়ে... সত্যিই যা খরচ....
পুরোহিত বলছে, আমাদের সময় খাতার এত দাম ছিল?! কি দাম গো... মেয়ে বেশি অঙ্ক করলে ভয় লাগে... মন্দিরে আর ক'টা টাকা দেয়?
কথা বলতে বলতে বকুলতলা এসে গেল।
পুরোহিত নেমে দশ টাকার একটা নোট বার করে হাতে দিয়ে বলল, নাও... খাওয়াদাওয়া হয়েছে? বাড়ি যাও এবার।
চালক পাঁচ টাকার একটা কয়েন এগিয়ে দিয়ে বলল, আসুন...
পুরোহিত বলল, দশটাকা বললে না?
চালক বলল, না না... পাঁচ টাকা তো....
পুরোহিত হাসল। বলল, মাথার ঠিক থাকে না গো.... কি বলেছ আর কি শুনেছি..... এসো... ভালো থেকো...
চালক স্টার্ট দিয়ে গাড়িতে অস্ফুটে বলল, আপনিও।