যে ছেলেমেয়েগুলো ইউক্রেনে ডাক্তারি পড়তে গিয়েছিল, তারা জানত ইউক্রেনের মানুষের শরীর সম্বন্ধে পড়ে এলে ভারতীয়দের শরীর বুঝতে অসুবিধা হবে না। এই বিশ্বাসেই আরো আরো দেশ থেকে আরো আরো অনেকে এসেছিল, যারা জানত ইউক্রেনের মানুষের শরীর নিয়ে পড়লেও তাদের নিজেদের দেশে ফিরে মানুষের শরীরের চিকিৎসা করতে, মনের চিকিৎসা করতে বাধা হবে না। বিজ্ঞান একই ভাষায় কথা বলে সারা বিশ্বে।
তারপর সবাই বুঝে গেল, মানুষের মাথার গঠন এক হলেও মাথার মধ্যে বাসা করে থাকা জিনিসগুলো এক না। সীমার পর সীমা টানা সেখানে। একজনের শরীরকে আরেকজনের শরীর অনায়াসে ছারখার করে দিতে পারে, শুধু সীমানার বিশ্বাসে। আমার সীমানা এদ্দূর। এদিকে আমি আমার। এদিকে আমি আমরা। ওদিকে তুমি। ওদিকে তুমি তোমরা। বিজ্ঞানের যে রাসায়নিক সমীকরণে ভাবনা জন্মালো, সে একই দু দিকের। শুধু পার্থক্য করে দিল সীমানার বিশ্বাস।
সহামর্মিতা কত কিলোমিটার গেলে নিভে যায় জানি না। সে নিয়ে কোনো গবেষণা হয়েছে কিনা তাও জানি না। শুধু জানি রাস্তা ঘাটে এত এত মৃতদেহের ছবি দেখেও এখনও ভাবছি সব ঠিক আছে, যতক্ষণ না আমার সীমানা পেরিয়ে ঢুকছে বারুদ।
এ নতুন কিছু নয়। টলস্টয় রাশিয়াতে বসেই লিখেছিলেন "যুদ্ধ ও শান্তি"। এই বাস্তব। এই সত্য। এত এত যুদ্ধ সফল হয়েছে, হয়ে আসছে গোলাবারুদের জোরে না, আমাদের শীতলতার প্রশ্রয়ে। জানি তো, এখনও আমার সময় আসেনি। এখনই ভাবব কেন? এটাই বাস্তব। এর অন্যথা হবে কেন? ভারতে যখন স্বাধীনতা আন্দোলন হচ্ছিল, তখন সবাই মিলে রাস্তায় ঝাঁপিয়েছিল বুঝি? রায়বাহাদুর পেতে চায়নি যেন কেউ?
কিন্তু আজ প্রশ্ন বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে কে? তার চাইতে বেড়ালের উপর সিসিটিভি লাগাও। আমরা এদিকে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে ক্লান্ত। আতঙ্কিত হতে নারাজ। ডোন্ট লুক আপ। এই তো কথা!