মাইকে ভেসে আসছে ধর্মসভার আওয়াজ। বক্তা গদগদ হয়ে উচ্চৈঃস্বরে বলছেন -
"...আমি বললুম, আপনি এত পড়াশোনা শিখেছেন। অমুক মতে দীক্ষাও নিয়েছেন। খুব ভালো। কিন্তু সদাচার বোঝেন? হেঃ হেঃ হেঃ.... বোঝেন না... জানবেনও না... আমাদের প্রাচীন ঋষিমুনিরা যে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সামাজিক শিক্ষা দিয়েছেন তা জানেন? জানেন না? জানেন না... জানেন না.. আমাদের ঠাকুর বলছেন.. আজ ঘরে ঘরে এত রোগ কেন?.... কারণ সে সদাচারভ্রষ্ট আমরা!....
তখন উনি বললেন, কি সদাচার? আমি বললুম শুনুন তবে... এই শিক্ষায় সমাজকে তুলে ধরবেন বলেই তাঁর আবার এ মর্ত্যে আগমন!.... সদাচার মানে... আপনি শিকনি ঝেড়ে হাত ধোন? কি ধোন?.. ধোন?... ধোন না... তাই থেকে রোগ। এই গেল একটা। আরেকটা যেমন ধরেন, আপনি প্রস্রাব করে হাত ধোন? আপনি বলবেন বাড়িতে থাকলে ধুই... রাস্তায় বেরোলে সব সময় হয় না।... এই তো নিষ্ঠা থাকল না... হেঃ হেঃ হেঃ..... একটা আলাদা বোতল রাখবেন। ওটা করেই সাথে সাথে হাত ধুয়ে নেবেন..."
কৌতুহল চাপতে না পেরে একটু এগিয়ে উঁকি মেরে দেখলুম শ্রোতা কারা? ও ব্বাবা! সব শিক্ষিত, ভদ্র, মধ্য-উচ্চবিত্তশালী নারীপুরুষ চোখ বন্ধ, অর্ধনিমীলিত, খোলা হয়ে শুনছেন।
ভাবলুম, নাক ঝাড়তে আর হিশু করা শেখাতেও যদি ভগবান বাবাজীকে ঘন ঘন বৈকুণ্ঠ ছেড়ে এখানে ল্যাণ্ড করতে হয় তবে তো বড়ই মুশকিল...