সৌরভ ভট্টাচার্য
17 January 2019
পল্টুদা ঘুম থেকে উঠেই আই আই টির সার্টিফিকেট ছিঁড়ে কুচো কুচো করে ভেবলুদার খাটালে ফেলে এলো। ফেরার সময় আমার সাথে ঘনাদার চায়ের দোকানের সামনে দেখা। গলায় মাফলার, পরনে চেক চেক লুঙ্গি, গায়ে ঘিয়ে রঙের শাল, চুল উসকোখুসকো। চশমাটা শালের কোনা দিয়ে মুছতে মুছতে বলল, ঘনা, চিনি ছাড়া বড়োগ্লাস।
ঘনা মাথা নেড়ে হুঁ জানালো। ঘনাদা গান গাইছে, "আর মা আমায় ঘুরাবি কত"। ঘনাদা গান গাইবার সময় কথা বলে না, মাথা নেড়ে জবাব দেয়।
পল্টুদা সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। বড় আপিসে চাকরি করত। এখন মাথায় ব্যবসার ভুত চেপেছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, তোমায় এমন তার কাটা তার কাটা লাগছে কেন গো?
পল্টুদা আমার দিকে সরে এসে বলল, সব জ্বালিয়ে দিয়েছি শালা!
আমি আঁতকে উঠে বললাম, কি!
ভাবলাম ঘরদোর সব জ্বালিয়ে এলো হয়ত। বলা যায় না, যা ঘটছে চাদ্দিকে, কুকুরের বাচ্চাও টিকতে পারছে না! আবার বলতে গেলে বলবে, কুকুর আছে রেবিস ভ্যাক্সিন কই? বোঝাও এবার, তা বলে পুরসভায় ফোন করলিনি কেন? যা হোক... পল্টুদার কথায় আসি।
পল্টুদা কানের কাছে মুখ এনে বলল, সার্টিফিকেট!
আমি আঁক করে উঠে বললুম, ওমা ক্যানো!!!!
পল্টুদার চোখটা ছলছল করে উঠল। বলল, কাল রাতে একটা ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলুম! দিল্লী থেকে মেল এসেছে। কন্যাকুমারী থেকে শ্রীলঙ্কা অবধি নাকি ভাসানো পাথরে ব্রীজ বানিয়ে দিতে হবে।
এই বলেই পল্টুদা ভ্যাঁ করে কেঁদে ফেলল, আর হাত পা ছুঁড়ে বলতে লাগল.. ও পিসি... ও দিদি.. কে আছো বাঁচাও....
[ছবিঃ সুমন]