Skip to main content

বাড়িতে এক সময় মেঝেতে এই দিনটায় প্রচুর আবীর পড়ে থাকত এখানে সেখানে। তাতে পায়ের ছাপ যে কত! বাচ্চাদের পায়ের ছাপগুলোর উপরে পড়ছে বড়দের, কখনও বড়দের ছাপ মুছে আঁকা হচ্ছে বাচ্চাদের পায়ের ছাপ। সকালে একপ্রস্থ হয়ে গেলে সন্ধ্যেবেলা আরেক প্রস্থ। আবীর তখনও মোছা হয়নি। পরেরদিন ঝাঁট দিতে দিতে কোমর ব্যথা। 
আজ পুরো বাড়িটার সামনের বারান্দাতে এক চিলতে আবীর পড়ে। পাড়ার ছেলে বৌরা দিয়ে গেছে। দাঁড়ায়নি কেউ একদণ্ডও। সবার তাড়া। তাড়া নেই শুধু বয়স্কা মানুষটার। জানলার ধারে সারাটা দিন কাটল। সামনের আমগাছটার ফাঁক দিয়ে যখন চাঁদ উঠল, খেয়াল হল। গোল থালার মত চাঁদ। দোল পূর্ণিমার চাঁদ। আমের বোলের গন্ধটা স্মৃতির ঝাঁপি খুলতে চায়। তিনি চেপে বন্ধ রাখেন। আবীরের গন্ধ তো সারাটা দিন। খুব চেনা গন্ধ, তবু তিনি অপরিচিতের ভান করেন এখন। 
ছবিগুলোর উপরে কাঁচের দেওয়াল। তার উপর থেকে আবীর দিতে হয় এখন। কোনো ছবির উপরে, কোনো ছবির নীচে। আবীরগুলো কাল স্নানে যাওয়ার আগে ঝেড়ে ফেলতে হবে। সাদা একটা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলেন। সেই সাদা কাপড়টা সিংহাসনের মাথার উপর রাখা আছে। কাপড়টার রঙ আবীরের রঙে রাঙানো। 
উনি উঠে বসলেন। কাপড়টা খুঁজতে হবে। কোথাও কীর্তন হচ্ছে একটা। যাবেন না। ভগবানের পায়ে আবীর দেওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। ভগবানের পায়ের আবীরও কাঁচ ভেদ করে তাঁর কাছে পৌঁছাতে পারেনি কোনোবার। তাঁর প্রার্থনার মত। মাঝে যোজন যোজন দেওয়াল।