Skip to main content

 বুড়োটা রিকশা চালিয়ে যখন রাস্তা দিয়ে যেত, মনে হত, পরের বারের প্যাডেলটা ঘুরাবার জন্য সে বুঝি আর জীবিত থাকবে না। লোকে একান্ত কাউকে না পেলে তবেই ওর রিকশায় উঠত। করুণায় নয়, সময়ের দাম আছে না? অত আস্তে চালালে হয়?
 বুড়োটা তবু এ পাড়া ও পাড়া, দু'গ্লাস ছাতু, চার গাল ভাত, আর দুটো রুটি খেয়ে ঘুরত রিকশা নিয়ে। রাত্রে যখন বাড়ি ফিরত, রিকশাটার হাতলের মাঝে একটা চুমু খেত। রিকশাটা একটা জোয়ান ছেলে হয়ে তার পিছনে পিছনে আসত।

বুড়িটা বাটনা বাটা হয়ে গেলে শিলে চুমু খেত, নোড়ায় চুমু খেত। কাচা হয়ে গেলে কলে চুমু খেত, গামলায় চুমু খেত। মোছা হয়ে গেলে ন্যাতায় চুমু খেত, বালতিতে চুমু খেত। সব চুমুরা জড়ো হয়ে সারা বাড়িতে জুঁইফুলের গন্ধ হয়ে ম-ম করত রাতে। বুড়ো ফিরে এসে বুড়ির ঠোঁটে চুমু খেত। অমনি জুঁইফুলগুলো ঝুরঝুর করে তাদের মাথায় বুকে পড়ত। রাত্রে তারা খেতে বসত। পাশে বসত মিনি। বেড়াল। তিনজনে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ত। চুমুরা শিশিরের মত জমে থাকত তাদের ছাদে। চাঁদের আলোয় চিকচিক করত। জোয়ান ছেলেটা দেখে হাসত আর গান গাইত।