সে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বলত,
ও প্রতিবেশী
সে মনের গভীরের কোনো কথা
আচমকা কানে এলে বলত,
এসব শুনলে হাসি পায়
তারপর সে বাজারে এসে বসত
নিজেকে টুকরো টুকরো করে
ভেজে, শুকিয়ে, মেলে, ছড়িয়ে
বিক্রি করত
যত লাভের অঙ্ক বেড়ে উঠত
তত সে তারাদের দিকে তাকিয়ে বলত,
আর কদিন, ধরেই ফেলব তোদের
গভীর রাতে যখন বাড়ি ফিরত
তার মত দেখতে একজন মানুষ
ছায়ার মত তার পিছনে পিছনে ফিরত
ক্লান্ত, অবসন্ন
সে থেকে থেকেই
পিছন ফিরে
দাঁত মুখ খিঁচিয়ে বলত
আর এক পা আসিস যদি
দেব খুন করে
তবু সে ছায়া আসত
একদিন লোকটার ভীষণ জ্বর হল
তার পাশে শুয়ে সেই ছায়ার মত লোকটা
তারও হল ভীষণ জ্বর
চাঁদের আলো এসে পড়েছে জানলা দিয়ে
লোকটা ভেংচিয়ে বলল
যা, যা এখান থেকে
দু দিন যাক
এমন আলো জ্বালব না
মুখ লুকানোর জায়গা পাবি না
চাঁদের আলো গেল না
লোকটা জ্বরের ঘোরে ঘুমিয়ে পড়ল
মাঝরাতে যখন ঘুম ভাঙল
শুনল খিলখিল হাসির আওয়াজ
সে কোনো রকমে উঠে বাইরে এলো
এসে দেখে
সেই ছায়া
আর চাঁদের আলো কিতকিত খেলছে
উঠানে
তারই উঠানে
আর আকাশের যত তারা
তার জমানো সব ধনসম্পদ নিয়ে
লোফালুফি, ছোঁড়াছুড়ি করছে
ধুলোবালির মত
সে রেগেমেগে কিছু একটা বলতেই যাচ্ছিল
হঠাৎ চোখে পড়ল তাকে
যে তার আগে আগে রাতদিন
একটা বালিঘড়ি নিয়ে হাঁটে
সে এসে বলল,
ওদের ছাড়ো
বালি আছে কোথায় বলতে পারো!
বালি যে প্রায় শেষ হল দেখি!
লোকটা ভীষণ ঘাবড়ে গিয়ে
চীৎকার করে বলল,
হাটো, হাটো এখান থেকে!
কেউ সরল না
লোকটা জ্বর গায়ে
একটা ছেঁড়া থলে হাতে
বাজারের রাস্তা ধরল
কিন্তু আলো কোথায়?
তারারা কোথায়?
ছেঁড়া ব্যাগ দিয়ে শুধু বালি পড়তে পড়তে যাচ্ছে….
সর সর….সর সর….করে
(ছবি Debasish Bose)