Skip to main content

ছেলেটা যখন ক্লাস সিক্সে পড়ে
তার মা একদিন তার আঙুলে একটা সাদা পাথর দেওয়া আংটি পরিয়ে দিল
বলল, দেখিস বাবু, তোর মন অনেক শান্ত হবে
ছেলেটার মন কোনোদিন শান্ত হল না,
কিন্তু সে বিশ্বাস করল,
আংটিটা না পরলে তার মন আরো অশান্ত হত
ছেলেটা মাধ্যমিক দেওয়ার পর
যখন বলল, ভূগোল পড়বে,
তখন তার উচ্চপদস্থ মামা বলল, ছেলেদের আর্টসে কি ভবিষ্যৎ?
সায়েন্স পড়ো
ছেলেটা সায়েন্স পড়ল
তেমন কিছু একটা হল না
মানে যেমন কিছু হলে মানুষ কিছু একটা হওয়া বলে,
কিন্তু ছেলেটা আজীবন বিশ্বাস করে গেল
যদি সে সেদিন সায়েন্স না নিয়ে আর্টস নিত
তবে আরো খারাপ হতে পারত
কতটা খারাপ সে আন্দাজও করতে পারে না।
ছেলেটার বিয়ে হল
ছেলেটা ভালোও বাসল মেয়েটাকে
কিন্তু মেয়েটার একটা অদ্ভুত অসুবিধা ছিল
যখন তখন সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলত,
তুমি কি মায়ের খোকা...নিজে ভাবো...নিজের কথা নিজে বলো...
ছেলেটার এ কথাগুলো শুনলেই মনে হত
তাকে যেন সুন্দরবনের জঙ্গলে নামিয়ে
কুয়াশায় মিলিয়ে গেছে লঞ্চ
আসলে ছেলেটা সব চাইতে ভয় পেত
মা, কাকা, পিসি, বাবা, মাসি, মামা ইত্যাদি ইত্যাদি কাউকে নয়
সে সব চাইতে বেশি ভয় পেত নিজেকে
নিজের মন শেকল ধরে টানলেই তার বুক দুরদুর করে উঠত
সে হাঁপাতে হাঁপাতে বলত,
না, না, না, এরকম করতে নেই!
ছেলেটার ডিভোর্স হল
এবং ছেলেটা আজীবন বিশ্বাস করল
ওই মেয়ের সঙ্গে থাকলে
তার আজ সর্বনাশ হত!
কতটা সর্বনাশ হত
সে কল্পনাও করতে পারে না
আসলে চায় না
কারণ সে সর্বনাশের আকাঙ্খায়
তার বুকের আগল ছাপিয়ে কান্না উঠত
বড্ড বেয়াড়া কান্না
বড্ড স্বাধীন!
ছেলেটার এখন আর কোনো সর্বনাশ নেওয়ার বয়েস নেই
তবু মাঝে মাঝে ভাবে
একটা কোনো সর্বনাশ ঘটালেই হয় তো বেঁচে যেত
যদিও কল্পনা করতে পারে না
বেঁচে থাকাটা মানে ঠিক কি..

 

Category