Skip to main content

 

সবার মত সেও চেয়েছিল শান্তিতে বাঁচবে। কাউকে না বিরক্ত করে একা একা বাঁচবে।

একদিন সে একটা চারাগাছ লাগালো। নিজের খেয়ালেই লাগালো। কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। এমনিই মনের সুখে লাগালো চারাগাছটা।

রোজ জল দিত। মাটির পরিষ্কার করে দিত। সার দিত। গাছটা অল্প অল্প বেড়ে উঠছে। তার কচি পাতায় বসা পোকা উড়িয়ে দিত। কেঁচোর মত কিছু উঠলে সরিয়ে দিত। পাখি এসে বলতো, বাহ! প্রজাপতি এসে বলতো, কী দারুণ!

কাউকে বিরক্ত না করে, ভালোই ছিল সে। চারাগাছটাকে আদর করত। নিজের গালে, চোখে ওর নরম পাতাগুলো বোলাতো। নিজের মনে নিজেকে নিয়ে আনন্দেই ছিল।

একদিন শুনল বাগানে মশ মশ, মড় মড় আওয়াজ। একপাল গরু। কী কাণ্ড! এদিকে গরু তো আসে না!

সে লাঠি হাতে দৌড়ালো। হুস হুস। হ্যাট হ্যাট।

গরুরা চম্পট দিল। সে বেড়া বাঁধল।

একদিন শোনে অনেক রাতে কীসের জানি আওয়াজ। বেড়া ভাঙার আওয়াজ তো! কারা? কে? কে?

ঘুটঘুটে অন্ধকারে লাঠি হাতে তাড়া করল। বেড়া ভেঙে পালিয়ে যাচ্ছে ওই কারা?

ফিরে এলো। সে তো শান্তিতে কাউকে বিরক্ত না করে থাকতে চেয়েছিল নিজের মত নিজে। চায়নি তো কারুর কাছে কিছু। তবে এ উৎপাত কেন?

ভোর হচ্ছে। সে লাঠি হাতে চারাগাছটার পাশে বসে। সূর্য উঠছে। তার মাথাটা ঠাণ্ডা এখন। সূর্যোদয় দেখতে দেখতে সে বুঝল একটা আদিম কথা, একা থাকলেও, একা থাকা হয় না। রুখে দাঁড়াবার সময় এলে রুখে দাঁড়াতেই হয়। একাই। নিজের সবটুকু শক্তি দিয়ে চারাগাছটাকে রক্ষা করার দায়িত্ব তার এখন। নইলে অধর্ম হয়। সে বুঝল গোটা জগতের সঙ্গে জীবন একটা অদৃশ্য ন্যায়ের সূত্রে বাঁধা। চাইলেও তার থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকা যায় না।

এখন সে চারাগাছ আর একটা শক্ত লাঠি একসঙ্গে থাকে।