তোমায় দেখলাম, তুমি দাঁড়িয়ে আছ, চাঁদের মত একা। তোমাকে ছাড়া যেন দেখার কিছু নেই। তোমাকে দেখেও যেন আশ মেটার নেই।
অভাব অভিযোগ কোনোদিনই আমার তেমন কিছু ছিল না। আজও নেই। তবে তোমার সামনে দাঁড়িয়ে আজ মনে হচ্ছে সময় আর জীবনের সমীকরণে কোথায় যেন আছে এক নিষ্ঠুরতা। সময় সাগরে ক্ষণিক জীবনের ঢেউ। অনন্তকে এতদিন জানতাম কল্পনার সীমাহীনতার বিহ্বলতা। আজ জানলাম, সে জানা ভীষণ রসহীন জানা। আনন্দহীন অহমিকার বিস্ময়। অনন্ত মানে নিজের মধ্যে নিজের তল না পাওয়া। তোমার মাধুর্যকে জানি, সে বোধ আমার নেই। তোমার মাধুর্যকে বর্ণনা করি, সে ভাষা আমার নেই। নীরবতাকে সহ্য করি, সেই ধৈর্যও আমার নেই। সমুদ্রের ঢেউ যেমন তীরের বুকে আছড়ে পড়ে নিজের আত্মহারা আনন্দকে জানাতে চায়, নিজের বিহ্বলতাকে প্রকাশ করতে চায় অনন্তকাল ধরে, না পেরে বারবার ফিরে যায়, আমিও তেমন ভাষার তটে ভাবের ঢেউ নিয়ে আসি আর ফিরে ফিরে যাই, বলতে পারি কই?
তুমি দাঁড়িয়ে আছ একা। গোটা আকাশ জুড়ে চাঁদের মত দাঁড়িয়ে আছ একা। তোমায় ডাকি, সে প্রয়োজন নেই, তোমায় না ডেকে ফিরে যাই, সে পূর্ণতা নেই। নিজের সমস্ত কাঙালপনা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি একা। তোমার আলোয় আমার আলপনা দেওয়ার নেশা। ওই আমার ডাক। সেই আমার সাধনা। সে আলপনায় তুমি পা রেখে দাঁড়াবে একদিন। চাঁদের মত একা। সেদিন আমি নেই। আমার না থাকার সমস্ত সত্যিটা তোমাকে ডেকে বলবে, সে তোমার জন্যেই বেঁচেছিল। তোমাকেই চেয়েছিল।
তুমি হাসবে। সৃষ্টির আদিমতম আশ্বাস তোমার সেই হাসিতে। তুমি দাঁড়িয়ে আছ গোটা আকাশ জুড়ে চাঁদের মত একা। আত্মমগ্ন। মাধুর্য আহত গোটা সংসার। বিহ্বল নেশায়।