তো কি হল কিছু বঙ্গসন্তানের ইচ্ছা হল জঙ্গল থেকে বাঘকে আনবে আমন্ত্রণ করবে। বেজায় বড় উৎসব করবে, লোককে একেবারে তাক লাগিয়ে দেবে।
যেমন ভাবনা তেমন কাজ। বাঘকে আনা হবে, সব যোগাড়যন্ত্র করে ফেলা গেল। কি কি মেনু হল বলা যাক। ডালের বড়া, ঝিঙে পোস্তো, কাঁচকলার তরকারি, কুমড়োর ছেঁচকি, সরু মুগডাল লাউ দিয়ে, শাক দিয়ে, মিষ্টি দই, পাঁচ রকমের সন্দেশ, রসোগোল্লা,পান্তুয়া আর শেষে মিষ্টি পান। আর দেরাদুন চালের ভাত তো আছেই।
সব প্রস্তুত। বাঘের আসার সময়ও হয়ে এল প্রায়। হঠাৎ কি মরতে একটা সারস সে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। সে বলল, এত আয়োজন কার জন্য গো?
সেই কয়েকজন বঙ্গপুঙ্গব গলা উঁচিয়ে বলল, আরে আজ বাঘ অতিথি আমাদের। জানো না? রাস্তায় রাস্তায় দেওয়াল লিখন, ফেস্টুন এসব দেখোনি?
সারস দু’বার হিক্কা তুলে বলল, ঠিক বলছ? বাঘ আসবে? মানে তাকেই তোমরা ডেকেছ? কিন্তু উনি তো এসব খান না..
বঙ্গপুঙ্গবের কেউ কেউ প্রথমে ভাবল এ নিশ্চয় কারোর ষড়যন্ত্র। অথবা বাঙালিকে আবার বঞ্চনা করার তাল। কিন্তু কেউ কেউ তো ছিল, খুব বুদ্ধিমান। তারা টক করে গুগুল করে বলল, আরে তাই তো! এতো বড় ভুল হয়ে গেল!
কিন্তু ততক্ষণে সারস উড়ে গেছে। কি করা? অনলাইনে শেয়ালকে ধরা হল। এখন সেই এই কয়েকজন বঙ্গপুঙ্গবের প্রধান উপদেষ্টা কিনা। তো শেয়াল সব শুনে বলল, এ আর এমন কি, বাঘকে গায়েব করে দাও। তার জায়গায় বসাও বাঘের মূর্তি। মূর্তি সব খায়। আর নিজেদের সেন্টিমেন্টটাকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে এমন সেনসিটিভ করো যাতে অল্প কিছুতেই দগদগে হয়ে যায়। বুঝলে?
ব্যস! আর কে কাকে পায়। হইহই পড়ে গেল চারদিকে।
কয়েকজন নানা ফন্দিফিকির করে বাঘের আসা আটকে দিল। ওদিকে মুহূর্তের মধ্যে বাঘের মূর্তি তৈরি হয়ে গেল হাজার দশেক। সে সব খায়, সব মানে, সবেতেই মাথা নাড়ে। এখন চলছে হইহই উৎসব। প্রধান অতিথি হয়ে এসেছে উপদেষ্টা শেয়াল। যে কচুর গুণগান করছে, যা নাকি বাঘের প্রধান খাদ্য, এ সব বলছে, আর হাততালিতে ফেটে পড়ছে সব!