Skip to main content

মিঠেরোদে গা এলিয়ে বসে থাকতে থাকতে টুক করে মারা গেল নরহরি।

 

তারপর হল ভীষণ কনফিউজড। ফাঁকা মাঠ। কেউ কোত্থাও নেই। নিজেকে দেখল। কোলের উপর খবরের কাগজ রাখা। ইউক্রেন, হিজাব, পাঞ্জাব, ইউপি। কত ভাবছিল। যেন ঘুমাচ্ছে। আহা কি শান্ত মুখখানা। নিজের মৃত গালে একটা চুমু খেল। যেন নিজের সন্তান।

এবার? ফাঁকা মাঠ। যাবে কোনদিকে? যেদিকে চোখ যায় শুধু মাঠ আর মাঠ।

কেউ ডাকল, দাদা, এদিকে....

ফিরে তাকালো। আফজলভাই। বাল্যবন্ধু। দুজনে অনেকক্ষণ অশরীরী আলিঙ্গনে জড়ালো নিজেদের। তারপর বলল, চলো ভাই কবাডি খেলি।

দেখতে দেখতে অনেকে চলে এলো। কবাডি খেলা শুরু হল। কি মজা দম নেওয়ার বালাই নেই। তাই দম আর ফুরায় না। সবাই হেসে লুটোপুটি খায়। এ ওর গায়ে আছাড় খায়।

রাত হল। চাঁদ উঠল। সবাই বলল এবার গানের আসর হোক। গান শুরু হল।

নরহরি আফজলের কানে ফিসফিস করে বলল, তা দাদা, কেউ বকে না? পুলিশপেয়াদা দেখছি না যে!

না দাদা, এখানে নিয়ম হল, কোনো ধর্মের, জাতপাতের, দেশের নাম নেওয়াই বারণ। কেউ সে সবের পরিচয় দিলেই তাকে আবার পাঠিয়ে দেওয়া হয় মর্ত্যে।

বুঝলাম না.....

আফজল বলল, চলো তোমায় প্রজ্ঞাবীক্ষণ টাওয়ারে নিয়ে যাই। তার আগে একটা কাজ করো, তুমি এইখানে তোমার নামের আদ্যক্ষরটা লেখো দেখি....

নরহরি লিখল, ন। আফজল লিখল, আ।

তারপর তারা প্রজ্ঞাবীক্ষণ টাওয়ারে উঠল। সে অনেক উঁচু। আফজল বলল, এবার নীচে তাকাও দেখি। তোমার নামের আদ্যক্ষর দেখতে পাও?

নরহরি অনেকক্ষণ দেখে বলল, হ্যাঁ ওই তো।

আফজল বলল, আমারটা?

নরহরি বলল, ওই যে....

আফজল বলল, সবটা মিলিয়ে কি দেখো?

নরহরি বলল, সাগর। বর্ণমালার সাগর।

আফজল বলল, হ্যাঁ। এই বর্ণে বর্ণে মিলিয়েই মালিক খেলা চালান।

নরহরি বলল, তিনি কই?

আফজল বলল, এ সব বর্ণ নিয়েই.... কোনো বিশেষ বর্ণে নেই বলেই সব বর্ণে আছেন....

নরহরি বসে পড়ল। বলল, তা আমাদের নীচে এমনধারা প্রজ্ঞাবীক্ষণ টাওয়ার নেই?

আফজল বলল, আছে। কিন্তু সে টাওয়ারে ওঠার রাস্তা সেখানের কিছু ক্ষমতাশীল দুষ্ট মানুষেরা যুগে যুগে আটকে দেয়। ভেদ না আনলে, গোলমাল না বাধালে তাদের লাভ নেই যে!

নরহরি বলল, বুঝলাম। চলো নীচে যাই, এর চাইতে কবাডি খেলি চলো।