Skip to main content

গাছটা ঠিক করল, সে আর বোকা হবে না। আগে তার ডালপালা চতুর্দিকে মেলা থাকত। পাখি বাসা বাঁধত, পিঁপড়েরা বর্ষাকালে ওর ডালে উঠে আশ্রয় পেত, ক্লান্ত পথিক ওর ছায়ার তলায় বিশ্রাম নিত। গাছটা আনন্দেই ছিল। কিন্তু বোকার মত আনন্দে। 
তার পাশে একটা ইলেকট্রিক পোস্ট ছিল। সে বলল, তুমি যে সারাদিন এত জনের সেবায় জীবন দিচ্ছ, নিজের জীবনটা কই? ওরা কি কখনও তোমায় 'ধন্যবাদ' বলে? কৃতজ্ঞতা জানায়? 
গাছটার মনে ধরল কথাটা। না তো! কেউ বলে না তো! এ তো বোকার মত জীবন হল। সে ঠিক করল আর না, আর হতে দেবে না। 
তার ডালপালাগুলো গুটিয়ে নিল, সব্বাইয়ের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিল। এখন সে বুদ্ধিমান হবে। শুধু নিজের জন্য বাঁচবে। 
একি! তার শিকড়টা এত বাঁকা কেন? তার পাতাগুলোর অমন কুঁচকানো বৃন্ত? আর ফুলের একি ছিরি! মাগো মা! ওদিকে ওই গাছটার পাতা দেখো - কি তার পাতার বাহার! ওই গাছটার ফুলের, আহা কি শোভা গো! আর শিকড়গুলোও কি মজবুত! 
গাছটা এতদিন খেয়ালই করেনি তো এসব! সে মনে মনে ব্যভিচারী হতে শিখল। সুখ পেল। এখন সে কল্পনা করে নেয় তার অমুকের মত শিকড়, তমুকের মত ফুল...
চারাগাছটা তার মা গাছটার দিকে ভুরু কুঁচকে তাকায়, মা গাছটা বলে, চোপ!
মাঝেমাঝে রেগে গিয়ে, সে তার নিজের শিকড়ের দিকে তাকিয়ে বলে, তুমি লজ্জা আমার! কেন তুমি অমুকের মত না?


ঘোষালদের বড়বউটা সত্যিই বদলে গেল।