যদি বুঝছি শোষিত হচ্ছি, তবে অপেক্ষায় থাকা কেন বাইরে থেকে কেউ এসে বোঝাক, হ্যাঁ তুমি শোষিত হচ্ছ বলে।
যদি বেরোনোর অবকাশ থেকে থাকে, বেরিয়ে আসি। নইলে একদিন নিজের উপর নিজের এমন বিশ্রী কানাগলির মত রাগ হতে থাকবে যে মনে হবে আমি কেন 'আমি' হতে গেলাম। অন্য কেউ তো হতে পারতাম।
অন্য কেউ হতে চাওয়া থেকেই শুরু হয় চোরা খারাপ থাকার সূত্রপাত। খোলাখুলি খারাপ থাকা মানুষ তবু তরে যায়। কিন্তু চোরা-খারাপ থাকা মানুষ শুকিয়ে যেতে থাকে ভিতরে ভিতরে। যখন বাইরে সবাই টের পায়, তখন সে নিঃস্ব! এক্কেবারে দেউলিয়া।
তাই বলছি, যদি মনে হয় বুঝে গেছি, বাস্তবে সেটা করে ফেললেই হয়। তবু অপেক্ষায় আছি, কেউ এসে আমাকে বাইরে থেকে বোঝাক, এ ভালো না। আমি সময় নিয়ে, অলস আরামে শুয়ে, তার বোঝানোর খুঁত বার করি। তার যুক্তির ভুল ধরি। যা বুঝেছি, তাকে গৌণ করে, যে ভাবে বোঝানো হল তাই নিয়ে আলোচনা করে কালাতিপাত করি।
এই হয়। তা না হলে, যা করছি, আর যা করা যেত তার মধ্যে এত ফারাক হয়!
আজ রাস্তায় দেখছিলাম দু’জন বেশ চেনাজানা পাগল নিজেদের মধ্যে গল্প করছে ব্যস্ত রাস্তার ভিড়ে। আমি কোনোদিন দু’জন পাগলকে গল্প করতে দেখিনি। দু’জনেই কথা বলছে, হাসছে, অথচ দু’জনের কথাতেই কোনো সঙ্গতি নেই। খানিকবাদে একজন পাগল চলে গেল। আরেকজন পাগল যাকে দেখল তাকেই গালাগাল করতে শুরু করল। যেন ওইটুকু সময় যে ওর সঙ্গে কেউ কথা বলল, তার আরামটুকু ও পেল। তারপর হঠাৎ চলে যাওয়ার ব্যথাটুকুও পেল। কিন্তু সে তো সুখটা আর ব্যথাটা কোনোটাকেই নিজের বোধে বুঝল না। মানুষ পাগল তো বোধেই হয়।
এই যে বোধ, এই তো পরম আশীর্বাদ। বোধের নাগালে আসা জিনিসকে ঠেলতে নেই। অনেক মাশুল দিতে হয়। নিজের বোধের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ। বোধ সময়ের সাথে সাথে বদলায়। কিন্তু সে ফেলে আসা পথের চিহ্ন রেখেই বদলায়। কিছুই গোপন করে না। বোধের কোনো গোপন অভিসন্ধি নেই বলেই বোধ চিরশুদ্ধ। বাকি যা আছে..... সে তো সে আছে বলেই আছে! নইলে গোটা বিশ্ব এদ্দিনে পাগলাগারদ হয়ে যেত।