সৌরভ ভট্টাচার্য
14 March 2019
ছেলেটা মার খেয়েছিল। গতকাল। জামাটা ছিঁড়ে এতগুলো টুকরো হয়েছিল...রাতে শুতে গিয়ে মনে হচ্ছিল - দুনম্বর প্ল্যাটফর্মের আনাচে কানাচে তার ছেঁড়া জামা, রক্তের দাগ, থুতু, তার মাথার খাবলানো ব্রাউন ডাই করা চুল। প্যান্টটা ছেঁড়েনি। আট বছর আগে পুজোর সময় কেনা গড়িয়াহাট থেকে।
চারদিন পর আবার সেই একই স্টেশানের দু'নম্বর প্ল্যাটফর্মেই বসে সে। অফিসযাত্রীদের ভিড় সেদিনের মতই। যারা দাঁড়িয়ে আছে সবাইকেই সে চেনে। তার আশেপাশেই সবাই, কিন্তু কেউ তাকে চিনতে পারছে না। কেউ না। অথচ তার বাঁচোখের নীচে এখনও কালশিটে, নীচের ঠোঁটটা অস্বাভাবিক ফোলা। খুব কাছে এসে দাঁড়ালে এখনও হয়ত রক্তের গন্ধও পাবে ওরা, তবু তাকে চিনতে পারছে না। তাকে 'সুজন নস্কর' বলে না চিনুক, পকেটমার বলে তো চিনুক, তাও চিনতে পারছে না। তাকাচ্ছে, ভুরু কুঁচকাচ্ছে, আবার মোবাইলে মাথা গুঁজে দিচ্ছে। মানুষ এত ভুলো!
সুজন হাসছে। কিন্তু ঠোঁটটা এতই ফুলে যে মনে হচ্ছে ভ্যাঙাচ্ছে...একটা লোক সদ্য ওয়াটসঅ্যাপ থেকে চোখ তুলে ওর দিকে তাকিয়েই তাই খিঁচ খেয়ে গেল, একটা দামী জ্বলন্ত সিগারেটকে ঠোঁটের ডান কোণে চেপে বলল, ল্যাওড়া!