আমার সমস্ত ধর্মগ্রন্থ, নীতিমালা পড়া হয়ে গেছে। এখন খোঁড়া কবরের পাশে শুয়ে। এখনও বেঁচে যদিও। ভিজে মাটির গন্ধ। পাখির ডাক। প্রশান্ত নীলাকাশ। এর বেশি বেঁচে থাকার উপাদান সংগ্রহ হয়নি কিছু। লাল পিঁপড়ের সারি এই যে সামনে দিয়ে বয়ে যাচ্ছে, সৃষ্টিকর্তার কোনো জটিল ধাঁধা সমাধান না করে, এরাই পয়গম্বর আমার। প্রাণের মধ্যে বিশুদ্ধ উষ্ণ অক্ষরে লেখা এদের কোরাণ, বাইবেল, গীতা। কোনো উপদেশের কাছে শৃঙ্খল পরেনি। গায়নি কোনো স্তবগান। শুধু প্রাণের গভীরে অসীমের বাণী শুনেছে অহরহ, যা শুকনো বইয়ের পাতা আর মৃত মহাপুরুষেরা শোনাতে পারেনি আমায় একদিনও, মূল্যবান শিকলের শর্ত না দিয়ে। আমি আদিম সত্তাকে ডেকে বলেছি, ডাকো সাকিকে। রুমিকে বলো আমি এসেছি। আমায় কবরে শোয়ানোর পর, মাটি চাপা দেওয়ার পর, আমি খাঁটি হব মাটিতে মিশে। আমায় যেন সে একবার কানে কানে বলে যায়, এ সমস্ত বিশ্বব্রহ্মাণ্ড বলতে যা কিছু সব, সব ভালোবাসায় চুবে, যে ভালোবাসাকে প্রত্যক্ষ করেনি আজ অবধি কেউ। বর্ণনা করেনি কেউ কোথাও। করতে পারে না, যতক্ষণ না সে মাটিতে এসে শুয়েছে নিজের কবরের পাশে, একা, বেঁচে থাকতে থাকতেই, কয়েকটা শুকনো পাতায় শুনতে পেয়েছে ভোরের আহ্বান।
সৌরভ ভট্টাচার্য
11 September 2020