Skip to main content

আগুন আলো দেবে বলে জ্বলে না। তার না জ্বলে উপায় নেই বলেই জ্বলে। সে জ্বলনে যদি আমি তাপ পেয়ে থাকি, আলো পেয়ে থাকি, সে নেহাতই একটা বাড়তি ঘটনা মাত্র। মূল ঘটনা না। মূল ঘটনাটা ওই জ্বলন। আগুন নিভলে তাই যতই অভিমান করি না কেন, আগুনের কাছে তা মূল্যহীন। সে জানেই না তার জ্বলে থাকার মূল্য আমার কাছে অন্যরকম ছিল। আমার ব্যবহারের ছিল সে। 

     আগুন নিভলো। নির্বাণ? জানি না। কোনটা বেশি সত্য? জ্বলে থাকা, না নিভে যাওয়া? জানি না। অন্ধকারে নিভে যাওয়া শীতল সলতেতে যদি শিশির বিন্দু জমে? সেই বিন্দুর উপর যদি ভাসে তারার ছবি। তুমি তাকে কি বলবে? আনন্দ? না সার্থকতা? 

     আমি কিছুই বলব না। পোড়া সলতে থেকে শিশির বিন্দু শুষে নেওয়া সূর্যের আলোর কাছে নেভা প্রদীপ কি হীনমন্যতায় দাঁড়াবে, মাথা নীচু করে? 

     না। সূর্যের আলোর তেজে সে যখন উত্তপ্ত হবে, তার রাতের নিজের তেজের কথা মনে পড়বে। তার মনে হবে সে-ও কোনোদিন জ্বলেছিল। 
   
     আসলে আমি প্রদীপের গল্প বলছি  না। কোনো মনের ডাক্তারই যখন বৃদ্ধ মানুষটার মনের রোগের নাগাল পেলো না, তখন সে বৃদ্ধ মৃত্যুকেই বুঝে নিতে চাইলো অবশ্যম্ভাবী সত্য বলে। ছেলের সঙ্গে দুই মহাদেশের দূরত্ব জীবন মরণের দূরত্বের চাইতেও হল বড়। মরণ যে ছেলের চাইতে এত কাছে, এত বিশ্বস্ত আগে বোঝেননি। 

     তাই নিজের যৌবনের জ্বলে থাকার দিনগুলো.... সে তাপে ছেলেকে বড় করা... তারার স্বপ্নে আকাশকে আত্মীয় জানা... আর দিনের শেষে শোকে-তাপে যৌবনের উষ্ণতার কথা ভাবা.... এই কি ছিল ভবিতব্য?