সামনে একটা জবাগাছ। জবা ফুটে আছে। সেটাই স্বাভাবিক। জবাগাছে জবাই ফুটবে। দার্শনিক মশাই পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। জিজ্ঞাসা করলুম,
- বলুন তো এটা কি ফুল? (উনি জবা চেনেন না তা নয় তবু ঠাট্টার কারণে)
উনি ফুলটার দিকে তাকিয়ে বললেন,
- রজনীগন্ধা তো নয়...
- তবে কি ফুল?
- ডালিয়াও নয়
- তবে কি ফুল?
- আকন্দ তো নয়ই
- তবে
- বেলফুলও নয়... জুই নয়... কুমড়ো ফুল নয়... টগর নয়...
তবু ওটা যে জবা সেটা আর বললেন না। জিজ্ঞাসা করলাম,
- আচ্ছা ফুল ছাড়েন। কি রঙ?
- সবুজ তো নয়... হলুদ নয়... বাদামী নয়... আকাশী তো নয়ই... খয়েরী নয়... সাদা তো হতেই পারে না...
তবু 'লাল' কথাটা বললেন না। (তিনি বর্ণান্ধ নন)
এমন সুচতুর তার্কিক দার্শনিকের সংখ্যা সংসারে কম নেই। যারা দেখে, বোঝে ঠিকটা, কিন্তু নিজের মাথার মধ্যে বসে থাকা ঠিকটার বেশি কোন কিছুকেই আমল না দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ঘেঁটে চচ্চড়ি পাকিয়ে একসা করে। এদের সাথে দম ফুরালেও কথা ফুরায় না।
কিন্তু এরা সাঁইত্রিশে ঠিক। যদি বলেন, এতই যদি মনুষ্যত্বে ভরসা তবে বাড়ীতে তালা দিয়ে বেরোন কেন? তারা বলবেন, ওটা বাস্তববুদ্ধি। আসলে ওটা আখেরে বুদ্ধি। এদের আখেরে বুদ্ধির সাথে তার্কিক বুদ্ধি একপথে কোনদিনও হাঁটে না। এক ঝিনুক হৃদয়ে সাত মহাসাগর যুক্তি। আসলে তাগিদের থেকে বড় গুঁতো সংসারে কিছুই নেই। কথায় আছে না, ঠেলায় না পড়লে বেড়াল গাছে চড়ে না।