Skip to main content

মহাপুরুষের আশ্রমের প্রাঙ্গণে বিশাল ভিড়। লাইনের শেষ দেখা যাচ্ছে না।

একজন বয়স্ক মানুষ আশ্রমে এলেন। চোখে-মুখে প্রবল বিস্ময়। একে ওকে ঠেলে সামনে অফিস ঘরের দিকে এগোতে লাগলেন। তিনি এদিকে আগে বহুবার এসেছেন। এই মহাপুরুষের জীবদ্দশায় তাঁকে দু'একবার দেখে গেছেন নিজের চোখে। আজ সেই মহাপুরুষের প্রস্তরমূর্তি দেখে মনে কিছু প্রশ্ন জাগল। কিন্তু কাকে জিজ্ঞাসা করেন। কারোর দেখা যাচ্ছে সময় নেই, সবাই ভয়ানক ব্যস্ত। হঠাৎ চোখে পড়ল একজন মানুষকে, তিনি এককোণে বসে বসে মালা গাঁথছেন।

ইনি সে মানুষের পাশে গিয়ে বসলেন। বললেন, নমস্কার, কেমন আছেন?

মালা গাঁথতে গাঁথতে উত্তর এলো, উনি যেমন রেখেছেন।

ইনি বললেন, আমার একটা প্রশ্ন আছে....

মালা গাঁথা থামল না, উত্তর এলো, বলুন।

আচ্ছা, এই যে ইনি, মানে যাকে আপনারা গুরু বানিয়েছেন, আমি তাঁকে কয়েকবার দেখেছি, মানে এদিকে মাছের ক'টা ভেড়ি আছে না? ওগুলো আমার। তা বলছিলাম কি, আমি তো যতবার ওনাকে দেখেছি, উনি সবসময় পাথরের মতই বসে থাকতেন। কারোর প্রশ্নের উত্তর দিতেন না, শুনেছি খেতেন টেতেনও না। নড়াচড়া করতেন না। তা সে অবস্থা থেকে এ অবস্থার পার্থক্য কি? ইনি তো জ্যান্তেই পাথর ছিলেন!

মালা গাঁথা থামল। তিনি প্রশ্নকর্তার চোখের দিকে খানিক তাকিয়ে থেকে বললেন, কিছুই চোখে পড়ছে না পার্থক্য?

প্রশ্নকর্তা বললেন, উঁহু।

এই যে এত লোক....

মালাগাঁথা আঙুল এখন লোকের সারির দিকে নির্দেশ করে আছে।

ইনি বললেন, তা বটে....

আবার মালা গাঁথা শুরু হল, গাঁথতে গাঁথতেই বললেন, এই হল কথা... তিনি যদ্দিন জীবিত ছিলেন, তদ্দিন মানুষের একটা ধারণা ছিল তাঁর দ্বারা কি সম্ভব আর কি সম্ভব না... এখন তিনি পাথর হয়েছেন, তাই লোকের এখন বিশ্বাস তাঁর দ্বারা সব সম্ভব.... তাই এত হাজার মানুষের ভিড়.. আগে হত দিনে চারশো কি পাঁচশো টাকা... উনি তো ও সব নিতেন না.... এখন সেখানে বিনা পার্বণের দিনই তিরিশ চল্লিশ হাজার... আর উৎসব হলে তো কথাই নেই.... ঢুকল কিছু মাথায়?

প্রশ্নকর্তা ভেবলে বসে। বললেন, উঠি....

মালা গাঁথা থামিয়ে বললেন, তা মাছের উৎপাদন কেমন?

ইনি বললেন, তা আপনাদের আশীর্বাদে... ভালোই....

তবে মাসে দেড়শো কেজি করে পাঠাবেন.....