মামু বলল, দেখো ডুবন্ত সূর্য.... কি দারুণ রঙ না মামু!
বললাম, হ্যাঁ।
মামু মুগ্ধ অস্তগামী সূর্যে, আমি মগ্ন হলাম ওর মুগ্ধতায়। পশ্চিমের রঙ ভালো যদি লাগে, পূবের রঙের সাথে বনিবনা হয় সহজেই। যার মনে শুধুই ক্ষোভ, সে সায়াহ্নের পশ্চিমাকাশকে দেখতেই পায় না। সে ভাবে পূর্ণতা বুঝি পুরোটা পেলেই। বোঝে না, পূর্ণতাটা নিজেকে পেলেই।
ওর শিশুমন হিসাব বোঝে না, সে পুরোপুরি নিজের কাছেই, তাই রঙের মধ্যে এত সহজেই দেয় ডুব। মুগ্ধ হয়। বিস্মিত হয়।
আর আমাদের...
"নিজের হাতে নিজে বাঁধা/ ঘরে আধা বাইরে আধা"
কি আশ্চর্য! এ সুরও রবীন্দ্রনাথ বেঁধেছিলেন পূরবীতেই। সেই সন্ধ্যার রাগ!
বছরের এই শেষ দিনটাতে এই কথাটাই ঘুরে ফিরে মনে আসছে। কোনো ক্ষোভ নিয়ে যেন আগামীকালটা শুরু না হয়। যা গেছে, তা যেন সম্পূর্ণ যায়। যেটুকু আছে, তাতেই যেন সন্তুষ্ট হই। এত রূপের মধ্যে চিত্তকে বিরূপ করে রাখলে, সে আমারই ক্ষতি। সব ক্ষতিকে ভোলার জন্য উচ্চ দর্শন লাগে না, লাগে মনের মধ্যে একটু ক্ষেপা হাওয়াকে আসতে দেওয়ার সাহস। আসুক ক্ষেপা। ক্ষেপুক মন। তারপরও যদি ভাবতে পারি, তবে সে ভাবনা হবে খাঁটি। বিশুদ্ধ ভাবনা। যা শিশুর মত বিস্মিত করে, জ্ঞানীর মত উদাস করে।
ওর শিশুমনে যে বিস্ময়, সে বিস্ময় আসুক আমারও দেখায়, হিসাবকে মিলিয়ে নয়, তাকে বোকা বানিয়ে। সেই অকৃত্রিম প্রার্থনা -
"দু হাত দিয়ে বিশ্বেরে ছুঁই শিশুর মত হেসে... যা পেয়েছি প্রথম দিনে সেই যেন পাই শেষে"...
( Pradipta কে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই, মামুর এই বিস্মিত, মুগ্ধ মুখটাকে আলোকবন্দী করার জন্য।)