বাংলা সিরিয়ালের কথা অমৃত সমান।
যেই শুনে তার হয় জীবন শ্মশান।।
সেট টপ উপরে ধরি নীচে জোড়া স্ক্রিন।
নাচিছে নাচাইছে সবে তাধিন তাধিন।।
নট-নটী অঙ্গসজ্জা কভু নাহি খুলে।
কথা কহে বসে নাহি, ঘরে বুলে বুলে।।
খাইতে পরিতে শুতে কোন্দল করি যায়।
কোথা শুরু কোথা শেষ, তল নাহি পায়।।
কে বলে অবলা নারী, থাকে কোন দেশে।
অবলার বাক্যবাণে বাংলা গেল ভেসে।।
বাল্মীকি-ব্যাস যাহা রচিতে নারিল।
বাংলা সিরিয়ালে তাহা সব কহি গেল।।
সমুদ্র মন্থন হেন বাংলা সিরিয়াল।
মন্থিছে প্রোযোজক পরিচালকমাল।।
কে লেখে এ হেন কথা, তারা কোন প্রাণী।
ভাবিতে ভাবিতে কবির শিরোর্দ্ধ পানি।।
কোন্দল জীবনের মূল, কোন্দল অমৃত।
এক স্ত্রী, এক স্বামী - না রহ পরিহিত।।
মৃদু মৃদু বহিলেই মলয় বাতাস।
গরল উগারি দাও, ফেল দীর্ঘশ্বাস।।
চা মুড়ি ধরি বসি সুগৃহিণীগণ।
রন্ধনশালা টিভিখানা মন উচাটন।।
কি প্রকারে দুইদিক সামলাইবে হায়।
ভাবিয়া ভাবিয়া হয় ঘর্মাক্ত কায়।।
রন্ধনে লবণ নাহি, পোড়া কখনও বা।
কখনও অসিদ্ধ ভাত, কখনও নুনে ডোবা।।
মনেতে সদাই ত্রাস কি হয় কি হয়।
কোন ঘর ভাঙে আজ, কোন ঘর রয়।।
সদা এই সুখকথা রমণীগণ মাঝে।
'কি হইবে এবার' ভাবি সুখ নেই রাতে।।
কেউ কাঁদে কেউ রাগে, নখ কাটে দাঁতে।
নানান বিকারে পর্ব বাড়ে সাথে সাথে।।
আর কত বলিব কথা এবার টানি যতি।
স্বয়ং বলিলে ব্রহ্মা নাহি পায় ইতি।।
এই সিরিয়ালের কথা শুনে পুণ্যবান।
মস্তিষ্কের কোষাণুপুঞ্জে জাগে বিষবাণ।।
যমেও ডরায় ইহা, ডরে দেব-দেবী।
ধরায় থাকো মা তুমি সিরিয়ালদেবী।।
দাস সৌরভ ভনে কাতর বাখান।
আর কতদিনে দেবী ছাড়িবে পরান।।
কর্ণপুটে বাঁশ দেহ, চক্ষু করো কানা।
কৃপা করি হরো হরো এ যম যাতনা।।
বাংলা সিরিয়ালের কথা অমৃত সমান।
যেই শোনে তার হয় জীবন শ্মশান।।
(ছবিঃ সুমন)