শূন্য প্রাণ কাঁদে সদা.... এখনও তারে চোখে দেখিনি.... কে দিল আবার আঘাত.... বসন্ত প্রভাতে এক মালতীর ফুল... যা হারিয়ে যায়... গভীর রজনী..... আরো আঘাত.... যেতে যেতে চায় না যেতে...
বনানী ঘোষ, আপনার গায়কীতেও এ গানগুলো শুনেছি। মনে হয়েছে গানের কথাগুলো আমার ঘরের চেয়ারে, খাটে বসে। হেঁটেচলে বেড়াচ্ছে। শ্বাস নিচ্ছে। আমার সঙ্গে মিশছে। আমাকে ছাপিয়ে আমাকে নিয়ে যাচ্ছে কোথাও।
আজ পড়লাম, আপনি নেই। খারাপ লাগছে। আমার মনে হচ্ছে আমার কিশোরবেলার একখণ্ড আপনার সঙ্গে ওদিকে কিছুটা এগিয়ে গেল। আমার সেই রেলকলোনির গাছপালা, আকাশ বাতাস, মাটিঘাস...পাখির ডাক..বৃষ্টির শব্দ.... আপনার সুরের আঁচলে আশ্রয় পেয়েছে কতবার। শূন্য প্রাণ কাঁদে সদা..... কতবার যে শুনেছি.... কেন জানি না। এই গানটায় আপনাকে এত কাছের মনে হয়েছে, সেদিনের এক গভীর বিপর্যয়ে আপনিই তো ছিলেন..... আজ খবরটা পড়া ইস্তক এই গানটাই তো বাজছে।
আপনি দেশের বাইরে থাকতেন। খুব বেশি গানের রেকর্ড নেই আপনার। তবু যে ক'টা আছে, তাতে আপনি আছেন। ভীষণভাবে আছেন। যখনই গভীরে হাহাকার জাগবে.... ভীষণ কান্না পাবে... কিন্তু চোয়াল শক্ত করে কাজ করে যেতে হবে.... কর্তব্য সেরে যেতে হবে.... আপনার কণ্ঠে উন্মত্ত শোক আমার শান্ত হবে.... আপনার সঙ্গে গলা মিলিয়ে কাঁদবে..... মানুষকে বড় হতে গেলে একা কাঁদতে শিখতে হয়.... বিনা অভিযোগে.... বিনা সান্ত্বনার আশ্বাসে...... আপনার গায়কীতে সে অভিজ্ঞতার ছোঁয়া আছে.... আপনার গায়কীকে আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম। ঋণ অনেক। ভার নেই। তৃপ্তিও নেই। আছে শূন্যতার বুকে মাথা রাখার সুখ। শূন্য প্রাণ কাঁদে সদা...