Skip to main content

পদার অঙ্কে মাথা যে কোনোকালেই ভালো নয়, তাহা আমরা সকলেই জানিতাম। তবু অসুবিধা ছিল না। বিদ্যালয়ের গণ্ডী পার করিয়া চায়ের দোকান করিয়া দিব্যি সংসার পাতিয়াছিল।
     কথায় বলে দশচক্রে ভগবান ভুত হন। আর এ তো সামান্য পদা মণ্ডল। হইল কি, কাহার কথা শুনিয়া জানি না, পদা রাজনীতিতে যোগদিল।
     কিন্তু রাজনীতিতে যোগ দেওয়া ইস্তক তাহাকে এক জটিল রোগে ধরিয়াছে। সেই কিশোর বয়সের অঙ্কের ভুত ফের মাথাচাড়া দিয়াছে। কত ওঝা, ডাক্তার, কবিরাজ করা হইল, সব বিফলে গেল। রোগটা কি? বলিতেছি।
     পদা মধ্যরাতে ঘুমের ঘোরে চীৎকার করিয়া ওঠে - "ওরে সুশীলবাবুর গোরুমোষগুলির খোঁজ নে রে...সব কটা আছে না কেহ কাটিয়া খাইল বা পাচার করিল?"
     সাথে সাথে পদার মা, বাবা, স্ত্রী, ট্যাঁপা টেঁপি মধ্যরাতে ঘর হইতে বাহির হইয়া পড়ে। নইলে পদা বাড়ি মাথায় করিয়া তুলে। এর ফলে পদার বাবার সুগার বাড়িয়াছে, পদার মায়ের বাত। পদার স্ত্রীর ক্ষুধা কমিয়াছে, ট্যাঁপাটেঁপির ফেল করিবার উপক্রম।
     তাও শুধু সুশীলবাবুর গরুমোষ হইলে হইত। ইদানীং তাহার সাথে আরেক উৎপাত বাড়িল। সে শেষ রাতে চীৎকার করিয়া ওঠে - "দেখ দেখি মধুপুরের ট্রেনটি লাইন হইতে পড়িল না মধুপুর অবধি পৌঁছাইল"।
     ফের পদার বাবা, মা, স্ত্রী, ট্যাঁপাটেঁপি ট্রেন খুঁজিতে শেষরাতে বেরোয়, ভোরবেলা ফিরিয়া আসে। নিন্দুকেরা বলে পদার বাবা নাকি রেল লাইনের ধারেই রোজ প্রাতঃকৃত্য সারিয়া আসেন।
     যা হোক, কিন্তু মধ্যরাতে গোরুমোষ আর শেষরাতে ট্রেন খুঁজিয়া খুঁজিয়া পদার পরিবারের নেহাতই বেহাল অবস্থা। কিন্তু পদাকে বোঝায় কার সাধ্যি!