Skip to main content

 

সন্ধ্যে নেমেছে। এই শহরের মধ্যেও পাখিরা বাসা বাঁধে গাছে, ফিরে আসে নীড়ে সন্ধ্যেবেলায়। তেমনই একটা বড় গাছ ডাক্তারের চেম্বারের পাশে। লাইন আছে। আমার এক বন্ধুর জন্য গেছি। অপেক্ষায় আছি।

একজন ভদ্রলোক বললেন, কে দেখাবেন?

আমি আমার বন্ধুকে দেখালাম। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কত নাম্বারে নাম?

ছয়।

আমার চার। আমার আগেই চলে যাবেন। আমি শুধু রিপোর্ট দেখাতে এসেছে। বায়োপসি। আমার স্ত্রীর। ভালো রিপোর্ট। আমার তাড়া নেই।

রোগা মানুষটার মুখটা উজ্জ্বল হয়ে উঠল। সচ্ছল অবস্থা যে নয় সে দেখে বোঝা যাচ্ছে। শুধু আমাদের না, আরো কয়েকজনকে এগিয়ে দিলেন। উনি পরে যাবেন। বললেন, আমার তো তাড়া নেই। ভালো আছে তো ও।

ইতিমধ্যে স্ত্রীর দুবার ফোন এলো। উনি বললেন, লাইন আছে গো। দেখিয়েই আসছি।

দুই চোখে কী অনির্দেশ্য উজ্জ্বল কৃতজ্ঞতা, আনন্দ নিয়ে বসেই রইলেন চেম্বারের বাইরে। সবার সঙ্গে যেচে কথা বলছেন। নিজে থেকে খোঁজ নিচ্ছেন। হয় তো এ মানুষটা গতকাল অবধি কারোর সঙ্গে কথা বলেননি। ঘুমাননি সারারাত। সে-ই আজ এই মুহূর্তে এত প্রগলভ। হাতে ধরা সাদা খামের মধ্যে রিপোর্ট। ভালো রিপোর্ট।

এতটুকু আশ্বাস। এইটুকুর মধ্যেই কত দুঃখ, কত বঞ্চনা, কত লাঞ্ছনা সব মানিয়ে নেয় মানুষ। শুধু এতটুকু আশ্বাস। নীড়ে ফিরে আসার সুখ। ব্যস, সব সহ্য করে নেব। তুমি শুধু থাকো। যেও না।