ভেবেছিলাম বড় বড় প্ল্যাকার্ড থাকবে। ভেবেছিলাম কলেজ পড়ুয়া একদল যুবক-যুবতী গলার শিরা ফুলিয়ে, গিটার হাতে সুরে-না-সুরে চীৎকার করবে।
গাজায় পোকামাকড়ের মত কচলে ফেলা শিশুদের ছিন্নভিন্ন ছবি। ধ্বংসস্তূপ। আর ধ্বংসস্তূপ। আর বিপন্নতার ছবি। যুদ্ধবিরোধী বইগুলো সাজানো থাকবে থরে থরে, সামনে সামনে। অনেক স্টলের দেওয়ালের রং হবে - কালো।
মণিপুর নিয়ে প্রচণ্ড সরব থাকবে ওরা। যারা আমাদের আশ্চে প্রজন্ম। আলোচনা সভায় চীৎকার করে সৎ সাংবাদিক বলবে অসৎ সাংবাদিকতার কথা। বলবে, চুপ করিয়ে দেওয়ার কথা। বলবে, জেলের কুঠুরিতে বন্দীদের কথা।
কেউ হয় তো বলবে, হঠাৎ গজিয়ে ওঠা কোনো ধর্ম প্রতিযোগিতার কথা। শ্রেণীবৈষম্যের কথা। সমাজ, শিক্ষায় দুর্নীতির কথা।
সব ভাঙা মেলার মত শান্ত, ভরা মেলায়। ভয়ে, না উদাসীনতায় জানি না। শুধু দেখলাম, অনুভব করলাম “ফিল গুড” পোষ্যতায় সাড়া দিয়েছে অনেকে। রাজপথ না, গলিপথেই হাঁটলাম শুধু। শুধু হাসলাম। শুধু উদযাপন করলাম। শুধু উৎসবের আমেজে গলিতে উঁকি দেওয়া মুখ ভার আকাশকে বললাম, দূরে যাও।
বড় ভার বুক জুড়ে। একা একা পাগলের মত কথা বলে যাচ্ছে সে। যেদিকে তাকাতে নেই সেদিকেই তাকাচ্ছে। জটিল সমস্যার এত যে সরলীকরণ, এত যে একমুখীকরণে ভেসে যাচ্ছে স্রোত, আমার পাথরটা শুধু ভাসাতে পারছি না। যে ভাষায় ভাসে পাথর, সে ভাষা কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না। আমি তুচ্ছ। আমি দুর্বল। তবু আস্থাহীন নই।
আজ হয় তো একা হওয়ার দিন। তাই হয় তো ভবিতব্য। কিন্তু তবু কোথাও জানি, আলো জ্বলে যে মন্দ ভালোর দ্বন্দ্বে, সে আলোকে পোষ মানাতে কেউ পারেনি কোনোদিন। সঙ্গে এও জানি, বই যেদিন পোষ্য হয়, সেদিন বড় দুর্দিন। মুখাগ্নি না করে আগুনেও নেয় না, এমনকি প্রাণহীন দেহ। আগুনে শুদ্ধ না হলে ভাষা, আত্ম-ক্ষমাহীন হয়ে ঘুরে বেড়াব কোথায়?