আত্মাবলোকন - ১
==============
আমার দিনরাত
বারোমাস
ঘুসঘুসে জ্বরের মত
ভয় করে
কখনও বাড়ে
আমায় স্থবির জড় করে
আবার কখনও ভীষণ বেপরোয়াও করে
অদ্ভুত এক অজানা ভয়ে আক্রান্ত আমি
রাতদিন ধিকিধিকি প্রতিহিংসা জ্বলে।
নেতাজী, ভগৎ সিং
মনে হয় এরাই আমার আদর্শ,
যদি আমার হয়ে দিত
ওই রাজনৈতিক মদতপুষ্ট
গুণ্ডাটাকে ক'বার কেলিয়ে,
কিম্বা যে, ঘুষ না নিয়ে আমার বাড়ির প্ল্যানটা পাস করেনি
কিম্বা যে পর্যাপ্ত ফিজ দিতে পারিনি বলে
ছেলেটাকে টিউশান ক্লাসে ঢুকতে দেয়নি
আর ওই যে নিজের ছেলের বিয়েতে
গাঁক গাঁক করে মাইক, ডিজে বাজিয়ে
বাবাটাকে মেরে ফেলল আমার
পুলিশ কিচ্ছু করল না
ওদের সবাইকে রাস্তায় মেরে ক্যালাক
নেতাজী, ভগৎ সিং এরা
ওসব আদর্শ-টাদর্শ বুঝি না ভাই
আমার মনে যে হীনমন্যতা আর ভয়
যে দুটো ধরে ঝুলে থাকে
প্রতিহিংসার স্পর্ধা আমার, দুর্বল
আমি তার জন্য ওদের চাই
আমার পাশে এসে দাঁড়াক
আমায় জিতিয়ে দিয়ে যাক
আমার সাহস নেই ওদের মুখোমুখি হওয়ার
“তারে যেন তৃণসম দহে”
কেউ পোড়ায় না ভায়া
শুধু ভয়টাই জ্বালায়
রাতদিন কানের কাছে বলে
“যাস না, বলিস না কিছু
চুপ করে থাক
চাকরি খোয়াবি, বউবাচ্চা আছে
কাণ্ডজ্ঞান সব খুইয়েছিস নাকি!”
আমি জানি
আমার এই চুপ করে থাকাতেই ওরা আস্কারা পায়
আমি নেতাজী, ভগৎ সিং-দের কথা যে বলি
ও আমার মুখোশ
আসলে আমি ওদের দিয়ে আমার স্বার্থসিদ্ধি চাই,
আদর্শ কী জিনিস দাদা!
আমার মত ভীতু মানুষের হৃদয়ে ওসব জন্মায়?
অহিংসা বললে, আমি দুর্বলতা বুঝি
গুলি বন্দুক বললে,
আমি একটা 'ফ্যায়সলা' বুঝি
দেশপ্রেম, ত্যাগ, স্বেচ্ছায় কারাবরণ
এসব আমার জন্য কি দাদা?
আমার বুক জুড়ে শুধু
ঘুসঘুসে জ্বর
আর বাতের ব্যথার মত
প্রতিহিংসার জ্বালা
মেটে না
আমি পাড়ায় পাড়ায়
ওদের ছবির আড়ালে নিজের দুর্বলতা ঢাকি
ধরা পড়ে যাই নিজের কাছে
জ্বালা ধরানো 'বোক্তিতা' দিয়ে আসি
পরদিন সকালে উঠে
নিজের বলা কথাগুলো
নিজেই লজ্জা পাই, ভয় পাই ভেবে
আমি এক বাণ্ডিল ভয় ছাড়া কিছু নই দাদা
ওসব নেতাজী, গান্ধীজি আদর্শ-টাদর্শ সব বাজে কথা
আমার জন্য
আমি শুধু স্বার্থের জন্য সহায় খুঁজি দাদা
যে কোন আছিলায়
আত্মাবলোকন - ২
================
যদি মেয়েরা না জন্মাতো?
তবে নিকৃষ্টতার মাপকাঠি ঠিক করতে কী করে
বলতে পারো?
বেমানান নয়,
সে তো আঁচল ছাপিয়ে পৌরুষ জন্মালে
নিকৃষ্ট
স্ত্রীলিঙ্গের আভাসযাপনে