অ্যাকোরিয়াম স্বপ্ন দেখছে। সে সমুদ্রের সামনে দাঁড়িয়ে। তার বুকের মধ্যে মাছগুলো বিস্ফারিত চোখে, কাঁচের দেওয়ালে মুখ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে।
তারা অ্যাকোরিয়ামকে বলছে, মিথ্যুক। তার কাঁচের দেওয়ালে ব্যথা, যেন চিড় ধরবে এখনই।
বনসাই বুকে টব স্বপ্ন দেখছে। সে জঙ্গলের মধ্যখানে দাঁড়িয়ে। তার বুকের উপর অস্থির শিকড়ে দাঁড়ানো বৃক্ষ চারিদিক দেখছে বিস্ময়ে।
সীমাবদ্ধ বৃক্ষ বলছে তাকে, মিথ্যুক। তার ভিতর শিকড় উপড়ানো ব্যথা। যেন মাটির শরীর ফাটবে এখনই।
সিংহাসনও সেদিন স্বপ্ন দেখছিল। সে অসীমের সামনে হঠাৎ। তার কোলের উপর শোয়া চিত্রপট লজ্জিত আরক্ত মুখে তার কোলের মধ্যে মুখ লুকিয়ে বলছে, "আমায় লুকাও"। সিংহাসন বলছে, কোথায়? অসীমের থেকে আড়াল কই?
স্বপ্ন ভাঙল। অ্যাকোরিয়াম, টব আর সিংহাসন তাকালো জানলার দিকে, দ্বিধান্বিত। একখণ্ড আকাশ, জানলা ঘেরা। জানলা বলল, গতকাল রাতে আমি স্বপ্ন দেখলাম, আমি যেন হারিয়ে গিয়েছি ওই নীলে। আমার সারা গায়ে আজ নীলরঙের ব্যথা।
অ্যাকোরিয়াম বলল, আমার বুকে সমুদ্রজাগা ব্যথা।
বনসাই বলল, আমার বুকে জঙ্গল ছোঁয়া ব্যথা।
সিংহাসন বলল, আমার বুকে অসীম হারানো ব্যথা।
সবাই চুপ। আত্মমগ্ন। ঘরময় জংলী বুনোফুলের গন্ধ, সমুদ্রের জোলো নোনা বাতাস। বুকের মধ্যে রথের চাকা গড়ানোর শব্দ। সমস্ত গ্রহ নক্ষত্র মাড়িয়ে চলছে মহাকাল।