Skip to main content
 
 
      টবে পিটুনিয়া লাগানোর কথা ছিল। হল না। হাজার ব্যস্ততা। কিন্তু টব কেনা হয়ে গিয়েছিল। কাজের মেয়েটা তাদের বাড়ির উঠোন থেকে মাটিও এনে দিয়েছিল। খুব উর্বর মাটি নাকি। কাজের মেয়েটা জবা লাগিয়েছিল, হয়েছে, উপচে পড়ছে গাছ। উচ্ছে লাগিয়েছিল, সে নাকি এত উচ্ছে যে তারা খেয়ে শেষ করতে পারেনি। বাজারেও নিয়ে গিয়ে বেচেছিল। সেই বেচে একটা ইমিটেশানের হারও কিনেছিল, চৈতালিকে দেখাতে এনেছিল। চৈতালি পরে লুকিয়ে ওরকম একটা সেট নিজের জন্যেও কিনেছিল। স্কুলের স্টাফরুমে ভূগোলের শম্পা দেখে বলেছিল, সত্যি!
 
 
 
      চৈতালি বিয়ে করেনি। পরিতোষ বন্ধুদের সাথে পুরী গিয়েছিল। নিজে ড্রাইভ করে বনগাঁ থেকে। খুরদা রোডের আগে একটা অ্যাক্সিডেণ্ট হয় ফেরার পথে৷ মারা যায়নি। তবে সারা জীবনের জন্য বিছানা বন্দী। চৈতালি সপ্তাহে একদিন করে যায়। রাতে থাকে না। বাড়িতে ওর মা ছাড়া কেউ নেই যদিও। পরিতোষ শুধু তাকিয়ে থাকে। চৈতালিও তাকিয়ে থাকে। এখন অভ্যাস হয়ে গেছে এমন যে মনে হয় তারা নিজেদের কথা বুঝতে পারছে। পরিতোষের মা, চৈতালির বাবা-মা সবাই বলেছিল তাকে বিয়ে করে নিতে অন্য কাউকে। চৈতালি করেনি। তার কাছে এটা ত্যাগও না, কর্তব্যও না। এটাই স্বাভাবিক মনে হয়েছে। 
      টবটার কথা ভুলেই গিয়েছিল। সেদিন ছাদে উঠে জলের ট্যাঙ্কের দিকে যেতেই চোখে পড়ল। টবটার মাটিতে ঘাস হয়েছে। সেই ঘাসে একটা ছোট্ট নীল ঘাসফুল। পিছন পিছন হাবলিও এসে দাঁড়িয়েছে, হাতে একটা ঝাঁটা আর খালি বালতি। ছাদটা ঝাঁট দেওয়া হয়নি অনেকদিন। হাবলি বলল, এম্মা, এযে ঘাস হয়ে আছে গো… তুলে ফেলি? 
      চৈতালি অন্যমনস্ক হয়ে কি ভাবছিল। হাবলির কথায় চমকে উঠে বলল, না, থাক, একটু জল দিয়ে দে। সজল চোখ এড়িয়ে নীচে নেমে গেল।