Skip to main content

একজন হনুমানের একটা ছবি আঁকলেন। ছবিটা এমন, ফ্রেমের মধ্যে হনুমান বসে। লেজটা ফ্রেমের বাইরে বেরিয়ে অনেকখানি।

সাহিত্য আকাদেমি পাওয়া বিখ্যাত তামিল লেখিকা লক্ষ্মী আকা আম্বাই বলছেন, দেখো কোনো স্রষ্টাই সম্পূর্ণকে তার সৃষ্টিতে ধরতে পারেন না। কিছুটা অনুচ্চারিত, অব্যক্ত থেকেই যায়। আমাদের সেটুকুকে নম্রভাবে স্বীকার করে নিতেই হয়।

সে-ই এক কথা। জিবরান বলেন, গোটা আকাশ দেখছ না, তোমার যেদিকে যতটুকু জানলা খোলা ততটুকুই দেখছ। উপনিষদ বলেন, যে বলে আমি জেনেছি, সে জানে না। যে বলে আমি জানিনি, সেও জানে না। যে বলে আমি জানি আবার জানিও না, সে-ই জেনেছে। মহাবীর বলেন, অন্ধদের হস্তি দর্শনের গল্প। কেউ বলে থামের মত, কেউ বলে সরু। "অন্ত কে তার সন্ধান পায়, ভাবিতে লাগায় ধন্দ হে"... আবার গল্প এসে পড়ে, চিনির পাহাড়। পিঁপড়ে মুখে করে একটা একটা দানা নিয়ে যাচ্ছে, ভাবছে এসে একদিন পুরোটাই নিয়ে যাব। এ গল্প রামকৃষ্ণদেবের বলাই বাহুল্য।

কথাটা বেশ। একি শুধু শিল্পী, বা সাহিত্যিক প্রমুখদের ক্ষেত্রেই সত্য? আমাদের কারোরই কি সব কথাটা কোনোদিন বলা হয়ে ওঠে, আমার পাশের মানুষকে? নিজের স্পষ্ট মানচিত্র কে-ই বা পেয়েছে? যাকে ভালোবাসি তাকেই কি স্পষ্ট করে বোঝাতে পেরেছি কতটা দিয়ে ভালোবেসেছি? পারিনি তো। নইলে মানবেন্দ্রর গলায় "আমি এত যে তোমায় ভালোবেসেছি."... গানে "এ যেন গো কিছু নয়"... অমন মোচড় দিয়ে যাবে কেন?

যে বলে সবটা বলেছি, আসলে সে অহংকারী। অহং এর জমানো হিসাবটুকুই মিলিয়ে ভাবছে, এই সব হল। হঠাৎ করে তার অহংকারের শিখা দমকা হাওয়ায় নিভে গেলে সে হতবাক হয়ে দেখে তারার আলোয় ভরা অনন্ত জগত তার সামনে। সে সব চিরকাল ছিল, সে নিজের ছায়ার আড়ালে দেখে উঠতে পারেনি। "আমি ম'লে ঘুচিবে জঞ্জাল"।