- তোমার আশেপাশে কেউ আছে?
- না নেই।
- তবে তোমায় আমি একটা কথা বলতে চাই।
- বলো।
- দাঁড়াও, আমি একটু ফাঁকা জায়গায় যাই।
তারপর ঘন কুয়াশা। দূরে চলে যাওয়া ট্রেনের শব্দ। কুকারের সিটি পড়ার আওয়াজ। টিভির অন্য জগতের মানুষদের শব্দ। নিজের বুকের শব্দ'র পাঁজরের উপর দিয়ে শামুকের মত চলাফেরা। যে শব্দ মানে প্রাণের অস্তি বোধ। যে শব্দ মানে "আমি আছি"। অথচ জীবন মানে হৃৎপিণ্ডে রক্তের আনাগোনা থেকে কত কিছু। কুয়াশা জমা রাত। শিশিরে ভেজা ভোর। বর্ষাভেজা ছাদ। কাঠফাটা নিঃশব্দ রোদে জনহীন আমবাগানে কাকের ডাক। জীবন কতটা ছড়িয়ে। কতটা জড়িয়ে। কত কথার আলপনা, জট, আড়াল, আবার বে-আব্রুতা।
পাথরের গায়ে লেগে থাকা জলীয় বাষ্পের পাথরকে ভেজাতে না ভেজাতে সকালের আলোয় মিলিয়ে যায়। পাথর শুকিয়ে যায়। তপ্ত হয়। কঠোর হয়। তখন পা পড়লে পা পুড়ে যায়। হাত লাগলে ছ্যাঁকা লাগে। কে বলবে এই পাথরও একদিন জলীয় বাষ্পে ভিজে যেতে চেয়েছিল।
কোনো কোনো পাথরের বুকে বটের বীজ পড়ে। পাথরে চিড় ধরে। শুকনো পাথরের বুক চিরে চিরে নামে কোমল শিকড়। জলের খোঁজে। পাথর বুক পেতে দেয়। সমস্ত ফাটল ধরানো যন্ত্রণা তখন মুক্তি।
সব নির্জনতা ফুরিয়ে যায়। দু'জন মানুষের কথা শেষ। তবু অনেক কথা চিল হয়ে আকাশের দশদিক উড়ে উড়ে বেড়ায়। আবার নির্জনতা খোঁজে।